Sambad Samakal

Sex Racket: হাইওয়ের ধারে সেক্স ট্র্যাপে হারিয়ে যাচ্ছে কিশোরীরা

Jul 31, 2021 @ 6:28 pm
Sex Racket: হাইওয়ের ধারে সেক্স ট্র্যাপে হারিয়ে যাচ্ছে কিশোরীরা

শোভনলাল রাহা

যমুনা আর শিখা, দুজনের বয়েসের তফাৎ ২ বছরের। একজনের ক্লাস নাইন, অন্যজন ইলেভেন। দুজনেরই ইচ্ছে মডেল হওয়ার, কিন্তু যোগাযোগ নেই। আচমকাই ইলেভেনের শিখার পল সায়েন্সের মাস্টার তাপস খোঁজ দেয় কল্যাণী হাইওয়ের পাশে স্টুডিও আছে। ওখানে গেলেই হতে পারে। ব্যাস, খোঁজ পেতেই হাজির দুই বান্ধবী। কিন্তু তাপস ওদের বসিয়ে রেখেই হাওয়া। বসে থেকে খিদে পেয়ে যায়। একটা লোক এসে খাবার আর জল দিয়ে গেল। বলল, আরও একটু অপেক্ষা করতে হবে। পেটের টানে, সেই খাবার খেতেই বেহুঁশ হয়ে যায় স্বপ্ন চোখে ভরা দুই মডেল-মুখী কিশোরী। জ্ঞান যখন ফিরল, তখন শরীরে অসহ্য ব্যাথা। রক্তের স্বাদ পাওয়া ক্ষুধার্ত হায়না পাশের বিছানায় বসে। সেই শুরু, প্রথমে ভয় থাকলেও পরে চাপে পড়ে মধুচক্রের সদস্য হতে বাধা নেই।

শিখা বা যমুনাই শুধু নয়, নানা ভাবে, নানা প্রলোভনের ফাঁদে আজও পৃথিবীর আদিমতম জড়িয়ে পড়ছে নাবালিকা কিশোরী থেকে উদ্ভিন্ন যৌবনা তরুণী। কখনও চটজলদি বেশি রোজগারের আশা, অভাবের সংসারে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা পাকা করার মরিয়া চেষ্টা, আবার কখনও নেহাতই উন্নত লাইফস্টাইলের টানে বাড়তি পকেট মানি জোগাড় করতে যৌনতার আদিম খেলায় ভেসে যাওয়া। সম্প্রতি পুলিশি অভিযানে নৈহাটি থানা এলাকার রাজেন্দ্রপুরে মধুচক্রের আসর থেকে কিশোরী-তরুণীরা উদ্ধার হওয়ার পর জেরায় সামনে আসছে এমনই চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

যুগ বদলিয়েছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলিয়েছে দেহ ব্যবসার ধরন। পৃথিবীর আদিমতম এই পেশা এখন নয়া মোড়কে পরিবেশিত হয়। আর এই সেক্স ট্র্যাপেই হারিয়ে যাচ্ছে স্কুল-কলেজের কিশোরী থেকে শুরু করে গ্রামের সহজ সরল বধূ, অভিজাত পরিবারের মেয়ে বউরাও।

কিন্তু কোথায় চলছে এই সেক্স রেকেট? জানা গিয়েছে, ব্যারাকপুর-কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের দুই ধারে গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে গজিয়ে উঠেছে একের পর এক বার কাম রেস্তোরাঁ। আর এই হোটেল ব্যাবসার আড়ালেই দীর্ঘদিন ধরেই রমরমিয়ে চলছে মধুচক্র। তবে নিষিদ্ধপল্লির স্টাইলে নয়। এক্সপ্রেসওয়ের দুধারে গজিয়ে ওঠা বার কাম রেস্তোরাঁগুলিতে দেহ ব্যাবসার ধরনটা সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে লোপ্রোফাইল ডাগর গৃহবধূ থেকে কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়া হাই প্রোফাইল  তন্বী, সবাই যুক্ত এই এসকর্ট সার্ভিসের সঙ্গে।

দিন কয়েক আগে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায় এবং নৈহাটি থানার উদ্যোগে রাজেন্দ্রপুরের একটি বাড়িতে মধুচক্রের আসর থেকে এক মহিলা পান্ডা সহ ছজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে দুই নাবালিকা সহ ২৩ জনকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বাড়ি থেকেই স্থানীয় পানশালা গুলিতে নাবালিকা-সহ বিভিন্ন বয়সি মহিলাদের দেহ ব্যাবসার জন্য পাঠানোর ছক ছিল।

কারা এই দেহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত? এইসমস্ত পানশালাগুলিতে যৌনকর্মীর কাজ করতে করা আসেন? কীভাবে এই পেশায় জড়িয়ে পড়ছে  নাবালিকা, কিশোরীরা? কাস্টমারই বা কারা?

লক ডাউনের বাজারে কীভাবে চলছে এই কারবার? খদ্দেররা কখন আসে? পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বছরের পর বছর কীভাবে চলছে এই দেহ ব্যবসা? তারই অন্তর্তদন্ত সমকালের প্রতিবেদনে। চোখ রাখুন আগামী কিস্তিতে।

Related Articles