প্রাণের ঝুঁকি, পদে পদে বিপদ, অথচ চাকরি চুক্তি ভিত্তিতে। প্রতিবাদে অগ্নিপথ প্রকল্পে চাকরির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে বিহার থেকে গুরগাঁও। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই দানা বাঁধছিল ক্ষোভ। বৃহস্পতিবার তা মাত্রা ছাড়ায়। লাগাতার বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় দূরপাল্লার ট্রেনে। আর তারপরেই ক্ষোভের আগুনে জল ঢালতে এই প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় মোদি সরকার। অগ্নিপথ প্রকল্পে আবেদনের বয়স ২ বছর বাড়িয়ে ২১ থেকে ২৩ করল কেন্দ্র।বিবৃতি জারি করে কেন্দ্র জানাল, গত দু’বছরে সেনা বাহিনীতে নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি। এই বিষয়টি সম্পর্কে সরকার যথেষ্ট সচেতন। তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২২ সালে প্রস্তাবিত অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে এককালীন ছাড় দেওয়া হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ২৩ করা হচ্ছে।গত মঙ্গলবার অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। ওই প্রকল্পে ১৭-২১ বছরের তরুণ-তরুণীরা চার বছরের জন্য মাসিক ৩০-৪৫ হাজার টাকার চুক্তির ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখা (স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনা)-য় যোগ দিতে পারবেন। তাঁদের বলা হবে ‘অগ্নিবীর’। সেনায় শূন্যপদ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ বছরের শেষে সেই ব্যাচের সর্বাধিক ২৫ শতাংশ অগ্নিবীরকে সেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাকিদের ১১-১২ লক্ষ টাকা নগদে দিয়ে পাঠানো হবে অবসরে। থাকবে না কোনও পেনশন।কিন্তু কেন্দ্রের এই ঘোষণার পরই ক্ষোভ বাড়তে থাকে এই চাকরি ঘিরে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চার বছর সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক এই নিয়োগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে দেশের যুবসমাজ। প্রশ্ন ওঠে চুক্তিভিত্তিক সেনার বাকি জীবনের নিরাপত্তার। ফলে ক্ষোভের আগুন আছড়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র কিছুটা বাধ্য হয়েই নিয়ম শিথিল করে বিক্ষোভে জল ঢালার চেষ্টা করল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে আবেদনের বয়সসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চিক্তিভিত্তিক সেনার জীবনের নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নের আগুনে ছাই চাপা দিতে পারবে কিনা, সেটাই এখন দেখার।