Sambad Samakal

Tarun Majumder: ভালোবাসার ‘চাওয়া-পাওয়া’ বুঝে নিয়ে অনন্ত যাত্রায় চির-তরুণ

Jul 4, 2022 @ 12:30 pm
Tarun Majumder: ভালোবাসার ‘চাওয়া-পাওয়া’ বুঝে নিয়ে অনন্ত যাত্রায় চির-তরুণ

খুব বেশি দিন নয় এক দশক আগের কথা অনেক দিন বাদে তিনি শুটিং ফ্লোরে। টলিউডের বক্স-অফিস সেরা অভিনেত্রী ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে। স্বভাবসুলভ দেরিতে ফ্লোরে অভিনেত্রী পৌঁছালেন। আশি পেরনো পরিচালক তাঁকে পুরো ইউনিটের সামনেই হালকা করে বকুনি দিলেন। অথচ খুব হাঁক-ডাক নয়। নরমে গরমে বুঝিয়ে দিলেন পুরো ইউনিটের সময় অপচয় হয়েছে। এরপর শোনা যায় তাঁর সেটে সেই অভিনেত্রী এক দিনও দেরি করেন নি। এভাবেই তিনি দশকের পর দশক আটপৌরে জীবনের গল্প সেলুলয়েডে লিখে গিয়েছেন। তিনি তরুণ মজুমদার। উচ্চকিত নয়, অথচ সাহিত্যের হাত ধরেই বাঙালি জীবনের গল্প বলায় তিনি ছিলেন অনবদ্য। যে সময় ছবি করতে শুরু করেছিলেন বাংলার চলচিত্র আকাশে তখন উজ্বল জ্যোতিষ্কের অভাব নেই। সত্যজিৎ-মৃনাল-ঋত্বিকদের সময়ে সিনেমা পরিচালনা করেও তিনি নিজের সিগনেচার বজায় রেখে গেছেন।

১৯৩১ সালে ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার বোগরায় জন্ম তরুণের। বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী। তরুণের পড়াশোনা কলকাতাতেই। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজ এবং স্কটিশ চার্চ কলেজে ছাত্র তরুণ পরে রসায়ন নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তরুণের ফিল্ম জগতে পদার্পন ১৯৫৯ সালে পড়াশোনা শেষ করার বেশ কয়েক বছর পর। তখন তাঁর বয়স ২৮। পরিচালনায় প্রথম দিকে সঙ্গে ছিলেন শচীন মুখার্জী ও দিলীপ মুখার্জী তিনজনের সমন্বয়ে যাত্রিক নাম দিয়ে উত্তম-সুচিত্রা জুটিকে নিয়ে প্রথম কাজ ব্লক-বাস্টার চাওয়া পাওয়া। এরপর ছক ভেঙ্গে অনুপ কুমার-সন্ধ্যা রায়ের জুটিতে গড়লেন ‘পলাতক’, টলিউড পেল অন্যতম বলিষ্ঠ দুই অভিনেতাকে। উত্তরকালে তরুণ মজুমদার টলিউডকে বহু রত্ন তুলে দিয়েছেন। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল থেকে আরও অনেকে। ‘বালিকা বধু’ থেকে ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ হয়ে হালের ‘চাঁদের বাড়ি’ সবই যেন আটপৌরে জীবনের গল্প। প্রেমেন্দ্র মিত্র, রাজেন তরফদার থেকে সমসাময়িক প্রচেত গুপ্ত- সাহিত্যের হাত তিনি ছাড়েন নি। ‘আর্ট ফিল্ম’ না করেও সোজা-সাপটা গল্প বলার এই অনুকরণীয় ভঙ্গীর ‘স্মৃতিটুকু থাক’ বাঙালির মননে উজ্বল হয়ে।

Related Articles