Sambad Samakal

PMO: মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে মোদি জেলে আদৌ যাননি, ভুল স্বীকার প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের

Sep 1, 2022 @ 9:02 pm
PMO: মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে মোদি জেলে আদৌ যাননি, ভুল স্বীকার প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে হওয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে সত্যাগ্রহে অংশ নিয়ে নরেন্দ্র মোদির জেলে যাওয়ার কোনও তথ্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়েরই জানা নেই। জয়েশ গুরনানি নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা তথ্যের অধিকার (আরটিআই) আইনের জবাবে একথা জানিয়েছে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদিরই সচিবালয় (‌পিএমও)‌। বৃহস্পতিবার ‘মোদির কারাবাসের দাবি’ তাঁর দফতরের স্বীকারোক্তির তথ্য প্রকাশে‌ প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে নয়াদিল্লি। কারণ, আগামী ৫ সেপ্টেম্বর, সোমবার থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার তিনদিনের নয়াদিল্লি সফর শুরু হচ্ছে। মোদি-হাসিনা একাধিক বৈঠকও হবে। স্বভাবতই তাঁর আগে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গতবছর ২৬ মার্চ ঢাকা সফরে গিয়ে স্বয়ং মোদি দাবি করেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে জেলে গিয়েছিলেন।
     বাংলাদেশের ৫০তম স্বাধীনতা বার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ঢাকা সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন যে, তিনি মুক্তিযুদ্ধের  সমর্থনে সত্যাগ্রহে অংশ নিয়েছিলেন। এবং তার জন্য জেলেও গিয়েছিলেন। ‘‌দ্য ওয়্যার’‌ পত্রিকার বুধবারের সংখ্যার প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে সত্যাগ্রহে মোদির অংশ নেওয়া, জেল খাটা ও মুক্তির বিষয়ে বিশদে জানতে আরটিআইয়ের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় জানিয়েছে যে, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।  নরেন্দ্র মোদীর ওই দাবির পরই জয়েশ গুরনানি নামে এক ব্যাক্তি প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ে আরটিআই করেছিলেন। গুরনানি তথ্যের অধিকার আইনে পাঁচটি বিষয়ে তথ্য চেয়েছিলেন। যেখানে সত্যাগ্রহ করেছিলেন সেই সংশ্লিষ্ট থানায় দায়ের করা এফআইআর, গ্রেফতারের মেমো বা প্রাসঙ্গিক নথি, জেল থেকে তাঁর মুক্তির নথি ও যেখানে মোদিকে রাখা হয়েছিল সেই কারাগারের নাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর দফতরই এমন কোনও তথ্য জানা নেই বলে জানিয়ে দিতেই ভারতজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদির ওই বাংলাদেশ সফর ছিল মূলত প্রতিবেশী দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুক্তিযুদ্ধের লড়াইয়ের স্মৃতিচারণা কেন্দ্রিক। একইসঙ্গে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫০ বছরেরও উদযাপন ঘিরে ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর  ওই ঐতিহাসিক সফর। বস্তুত সেই কারণে ঢাকা সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভেও শ্রদ্ধা জানান। সাভারে বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন, তখন সেখানে ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ডঃ এনামুর রহমান। বাংলাদেশ সফরে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে নিজের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী তখন বলেন, ‘‘‌আমার জীবনে প্রথম আন্দোলনগুলির অন্যতম হল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ। আমার বয়স তখন ২০-২২। আমি ও আমার বন্ধুরা ভারতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সত্যাগ্রহে সামিল হয়েছিলাম। তার জন্য আমার জেলে যাওয়ারও সৌভাগ্য হয়েছিল।’’ প্রধানমন্ত্রী মোদির ওই দাবি সেই সময়ে প্রবল বিতর্কের সূত্রপাত করেছিল। ভারতে মোদির বিরোধীরা তাঁর দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিলেন। কিন্তু এবার আরটিআইয়ের জবাবে সেদিনের দাবি ভুল প্রমাণিত হল। প্রধানমন্ত্রী মোদির বেশ ক’‌য়েকটি দাবি অতীতেও ভারতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। যার মধ্যে রয়েছে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও চা বিক্রেতা হিসেবে নিজের জীবনের অতীত-কাহিনী।

Related Articles