পঞ্চায়েতে ভুয়ো খরচ রুখতে এবার কঠোর পদক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বড়সড় আর্থিক সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তৃণমূলের ১১ বছরের শাসনকালে যা যুগান্তকারী বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। যদিও
মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপের জেরে এবার বন্ধ হতে চলেছে নেতাদের করে খাওয়ার রাজনীতিও। কারণ, নতুন এই আর্থিক সংস্কারের জেরে কাজ না করে খরচ দেখানো বা কম টাকার কাজ করে বেশি টাকা খরচ দেখানো, কিংবা উপভোক্তাকে সুবিধা পাইয়ে দিয়ে কাটমানি খাওয়ার প্রবণতা এবার বন্ধ হতে চলেছে। ২০০৪ সালে বাম আমলে পঞ্চায়েতে এই বিষয়ে আইন চালু হয়। সেই আইনই এবার নতুন করে বলবৎ করতে চলেছে নবান্ন। শুক্রবারই বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর এই আর্থিক সংস্কারের উদ্দেশ্য একদিকে যেমন পঞ্চায়েত স্তরে চুরি ও এক শ্রেণির নেতার করে খাওয়া বন্ধ করা, তেমনই এই সংস্কারের মাধ্যমে রাজ্যের প্রান্তিক ও গরিব মানুষ তাঁদের পাওনা টাকা ষোল আনাই বুঝে পাবেন।
নির্দেশ অনুযায়ী, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের কাজ দেখভাল করার জন্য অফিসারদের দায়িত্ব দিতে চলেছে নবান্ন। নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ডিভিশনাল কমিশনার একটি জেলা পরিষদে মাসে একবার গিয়ে কাজের হিসাব নেবেন। জেলা শাসকদের প্রতি মাসে একটি করে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে পরিদর্শনে যেতে হবে। আর প্রতিটি বিডিওকে মাসে তিনটে করে গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে কাজের হিসাব চাইতে হবে। পাশাপাশি প্রান্তিক মানুষকে তাঁদের হকের টাকা পৌঁছে দিতে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার ব্যবস্থাকে আরও আঁটোসাটো করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এতদিন জয় বাংলা পোর্টালের মাধ্যমে ডাইরেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফারের যে ব্যবস্থা ছিল, তা বাতিল করে করে গোটা রাজ্যে অভিন্ন একটি ক্যাশ ট্রান্সফার পোর্টাল বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্যাপারে চার জন অফিসারকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন একজন আইএএস অফিসার। তা ছাড়া মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে মাথায় রেখে একটি ১৪ সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটিও তৈরি করা হয়েছে।