Sambad Samakal

Naihati: রেস্টুরেন্টের ফেলে দেওয়া খাবার খেয়ে গোরু-কুকুরের মৃত্যু! তদন্ত শুরু

Oct 13, 2022 @ 7:11 pm
Naihati: রেস্টুরেন্টের ফেলে দেওয়া খাবার খেয়ে গোরু-কুকুরের মৃত্যু! তদন্ত শুরু

সুশ্বেতা ভট্টাচার্য

রেস্টুরেন্টের ফেলে দেওয়া খাবার খেয়ে একের পর এক গোরু, কুকুরের মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নৈহাটিতে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নৈহাটি পুরসভা। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে এরপর ফের কোনোও গোরুর রহস্য মৃত্যু ঘটলেই পুরসভা সেটির ময়নাতদন্ত করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানালেন নৈহাটি পুরসভার স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরপ্রধান পার্ষদ সনৎ দে।

সনৎবাবু জানান, বিষয়টি তাঁর নজরে আসে দিন সাতেক আগে। তিনি নৈহাটি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। কিছুদিন আগে তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তাঁর কাছে এলাকায় চুরি বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ নিয়ে হাজির হন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেই সনৎবাবু জানতে পারেন, এলাকায় একসময় প্রচুর কুকুর থাকলেও সম্প্রতি কোনোও কারণে এলাকা প্রায় কুকুর শূন্য হয়ে গিয়েছে এবং তার জেরেই চুরির ঘটনা বাড়ছে। স্থানীয় মানুষের অনুমান ছিল, চোররাই বিষ মেশানো খাবার খাইয়ে কুকুর মেরে ফেলছে। এরপরেই বিষয়টিতে নজর দেন সনৎবাবু। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, শুধু তাঁর ওয়ার্ডেই নয়, সমগ্র নৈহাটি পুরসভা এলাকায় গত এক মাসে মৃত্যু হয়েছে ৫০টিরও বেশি কুকুরের। এমনকী, রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৭ টি গোরুর। ষাঁড় ও মহিষ মিলিয়ে সংখ্যাটা ২৫ এর বেশি।

কিন্তু গোরু-কুকুরের এভাবে মৃত্যুর কারণ কী? পুরসভার পশু চিকিৎসকদের নিয়ে তদন্তে নামেন সনৎবাবু। মৃত গোরু ও কুকুরগুলোকে পরীক্ষার পর পুরসভার ভেটেনারি সার্জেনের আশঙ্কা, খাবার থেকে পেটে ইনফেকশনের কারণেই পেট ফুলে মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক গোরু, ষাঁড়, মহিষ ও কুকুরের। এই আশঙ্কার কথা পুরসভার স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের পুরপ্রধান পার্ষদ সনৎ দে’কে জানান ভেটেনারি সার্জেন। এরপর সনৎবাবু কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে নিজে পরপর কয়েকদিন রাতের দিকে এলাকা পরিদর্শনে বের হন। তিনি লক্ষ্য করেন, বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের বেঁচে যাওয়া ও নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার, যেমন, বিরিয়ানি, চাউমিন থেকে ফুচকার দোকানের নষ্ট হয়ে যাওয়া ঘুগনি দোকানিরা রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছেন। এবং সেই পচে যাওয়া খাবার খেয়ে নিচ্ছে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো কুকুর-গোরুর দল। কেউ কেউ আবার “জীব জ্ঞানে শিব সেবার লক্ষ্যে” নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওই খাবার পাড়ার কুকুরদের খাইয়ে যান। এরপরেই এবিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয় বলে জানান সনৎবাবু। এলাকার রেস্টুরেন্ট, ফুডস্টলের মালিকদের তাঁর অনুরোধ, “দয়া করে পুরসভার দিয়ে যাওয়া ওয়েস্ট বক্সেই বেঁচে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার জমিয়ে রাখুন এবং পরের দিন পুরসভার ময়লা ফেলার গাড়ি তা আপনদের থেকে সংগ্রহ করে নেবে। রাস্তায় খাবার ফেলবেন না।” সনৎবাবু আরও বলেন, “প্রাথমিক ভাবে রেস্টুরেন্টের ফেলে দেওয়া খাবারের থেকে ইনফেকশন হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে বলে মনে করা হলেও আমরা এবিষয়ে এখনও নিশ্চিত নই। সেই কারণে পরবর্তীতে গোরুর মৃতদেহের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে নির্দিষ্ট কারণ জেনে সমাধানের পথ খোঁজা সহজ হবে।”

Related Articles