করোনা কাঁটা এড়িয়ে দু’বছর পর ফের শারদোৎসবে চেনা ছন্দে বাঙালি। পরিবার, বন্ধুদের হাত ধরে রাস্তায় নেমেছে ঠাকুর দেখার ঢল। রেস্তোরাঁ থেকে পুজো মণ্ডপ, জমেছে আড্ডার আসর। একইভাবে পুজোর দিনগুলিতে সামাজিক বাধা নিষেধের গণ্ডি পেরিয়ে কাছের মানুষের সঙ্গে শরীরী উষ্ণতা ভাগ করে নেওয়াতেও ছিল না খামতি। কলকাতার কাপল ফ্রেন্ডলি ওয়ো হোটেলগুলিতে উপচে পড়েছে ১৮ থেকে ৫৮-র ভিড়। কলেজ পড়ুয়া তরুণীর কাঁপা কাঁপা হাত ধরে সহপাঠী যুবক যেমন হোটেলের বন্ধ ঘরে যৌবনের বাঁধ ভেঙেছে, তেমনই পাশের বাড়ির দেওর, কিংবা অফিসের বস বা সহকর্মীকে পরকীয়ার বৃষ্টিতে ভিজিয়েছেন তন্বী যুবতী। আবার সস্তার গা ঘিনঘিনে পরিবেশ এড়িয়ে এসকর্টের ঢঙে অনেক পেশাদার যৌন কর্মীও এবার ওয়ো হোটেলে কাস্টমার টেনে চড়া দর হাঁকিয়ে নিয়েছেন। সব মিলিয়ে উৎসবের দিনগুলিতে বুকিং নিয়ে গিয়ে কার্যত দিশেহারা অবস্থা হয়েছে ওয়ো হোটেলগুলির। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, চাপের মুখে পুজোর দিনগুলিতে ঘণ্টা চুক্তিতে ঘর ভাড়া দিতে হয়েছে ওয়ো হোটেলগুলিকে।
অন্যদিকে, করোনার রক্তচক্ষুর জেরে গত দু’বছর পুজোয় ব্যবসা প্রায় হয়ইনি সোনাগাছিতে। ফলে এবারের পুজো ঘিরে বাড়তি আশা ছিল এই লালবাতি এলাকার। শুধু যে যৌন কর্মীদের টানেই এখানে পুজোয় খদ্দেররা আসেন, তা তো নয়। নতুন প্রেমে পড়া তরুণ তরুণী থেকে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানো বহু যুগল এইসময় ঘণ্টা ভিত্তিতে সস্তায় ঘর খুঁজতে আসে এই সোনাগাছিতে। কিন্তু এবছর যেন উলটপুরান। এর জন্য করোনা কালীন বাড়তি পরিচ্ছন্নতার অভ্যেস ও সেই সঙ্গে উৎসবের আবহে ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্তকেই দায়ী করছে লালবাতি এলকা। সব মিলিয়ে এবার পুজোয় কার্যত মাছি তাড়াল সোনাগাছি। আর উল্টোদিকে, উপচে পড়া ভিড়ে সারা বছরের ব্যবসার একটা বড় লক্ষ্যমাত্রা পুজোতেই পূরণ করে নিল শহর কলকাতার ওয়ো হোটেলগুলি।