Sambad Samakal

Didir Surakkha Kabach: নজরে পঞ্চায়েত, মানুষের কল্যাণে কী নয়া কর্মসুচি তৃণমূলের?

Jan 2, 2023 @ 3:13 pm
Didir Surakkha Kabach: নজরে পঞ্চায়েত, মানুষের কল্যাণে কী নয়া কর্মসুচি তৃণমূলের?

চলতি বছরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। আর সেই লক্ষ্যেই মানুষের কাছে পৌঁছতে মরিয়া সব রাজনৈতিক দলই। এমনিতেই লাগাতার দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা নিয়ে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছনোর দৌঁড়ে অনেকখানি এগিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। মা-মাটি-মানুষের সঙ্গে সেই সম্পর্ক আরও নিবিড় করতে এবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করল তৃণমূল। কর্মসূচির নাম “দিদির সুরক্ষা কবচ”। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, মা মাটি মানুষের জীবনের সঙ্গী হওয়াই লক্ষ্য এই বিশেষ কর্মসূচির।

সোমবার নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের ডাকা সভার মঞ্চ থেকে ওই কর্মসূচিকে তৃণমূলের ‘কর্মযজ্ঞ’ বলে ঘোষণা করেন অভিষেক। তিনি জানান, এটি বাংলার ১০ কোটি মানুষের জন্য ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’। যার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে ‘দিদির দূত’। এই ‘দূত’ বা প্রতিনিধিদের মধ্যে যেমন বাংলায় তৃণমূলের সাড়ে তিন লক্ষ স্বেচ্ছাসেবী থাকবেন, তেমনই থাকবে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও। যার কাজ হবে বাংলার ১০ কোটি মানুষ এবং ২ কোটি বাড়ির সমস্যা, অভাব, অভিযোগের কথা দলের শীর্ষস্তরে এমনকী, নেত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া। আর তাই এই কর্মযজ্ঞের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’।

বাংলার জনতা যাতে সরকারের ১৫টি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা ঠিক মতো পেতে পারেন, তার জন্যই এই ব্যবস্থা বলে জানান অভিষেক। দিদির দূত অ্যাপের মাধ্যমে প্রত্যেকটি বাড়ি ম্যাপিং করে আলাদা আলাদা প্যারামিটারের সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন— শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, ঐক্যশ্রী, স্টুডেন্ট্স ক্রেডিট কার্ড, মানবিক পেনশন, স্বাস্থ্যসাথী, বাংলা আবাস যোজনা, খাদ্য সাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, যুবশ্রী মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে। আগামী ২ মাস ধরে রাজ্য তৃণমূল স্তরের ৩৫০ নেতা দশ দিন করে প্রতিটি অঞ্চলে রাত্রিযাপন করবেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের অভাব-অভিযোগের কথা যাতে নেত্রীর কাছে পৌঁছয়, তার ব্যবস্থা করবেন। নেতারা চলে আসার পরের দিন থেকে দিদির দূতেরা গিয়ে প্রতি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে দেখবেন, জনগণ সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন কি না।

দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে ৩৩৪৩টি অঞ্চল। ২ মাসের কর্মসূচিতে এই সমস্ত অঞ্চলের ৯৮ শতাংশেই গিয়ে পৌঁছতে পারবেন দিদির দূতেরা। প্রতিটি অঞ্চলের সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাধিপতি-সহ এলাকার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক প্রধানদের নিয়ে ৩২০ জনের দল থাকবে। প্রতিটি অঞ্চলে গিয়ে দিদির দূতেরা কী কী করবেন, তার তালিকা ধরানো হবে। সেই অনুযায়ীই কাজ করতে হবে তাঁদের। তবে নির্ধারিত কর্মসূচির পাশাপাশি সারপ্রাইজ় ভিজ়িটও করতে হবে। যাতে এলাকার প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যায়।

দিদির দূতদের প্রত্যেককে একটি করে কিট ব্যাগ দেওয়া হবে প্রত্যেক জেলা হেড কোয়ার্টার থেকে। ওই কিটব্যাগে থাকবে নির্দেশিকা ও এ দিদির অর্থাৎ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা চিঠি। কিউ আর কোড থাকবে। স্ক্যান করলেই দিদির দূত ডাউনলোড হবে। থাকবে ক্যালেন্ডার। ২০২৩ এবং ২০২৪ দু’বছরের ক্যালেন্ডার বাড়িতে বাড়িতে দিতে হবে। থাকবে ব্যান্ড এবং দিদির দূত লেখা ব্যাজ। যে ব্যান্ড নিজে পরবেন এবং যে বাড়িতে যাচ্ছেন, তাঁদেরও পরাতে পারেন।
তৃণমূলের স্বেচ্ছাসেবীরা যাতে দিদির যোগ্য দূত হিসাবে আচরণ করেন, বিনম্র আচরণ করেন, সে ব্যাপারে দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ।
৩০ মিনিট করে প্রত্যেক বাড়িতে কাটাতে হবে দিদির দূতেদের। ধৈর্যচ্যুতি চলবে না। প্রত্যেক বুথ থেকে ৫টি করে টিম তৈরি করতে হবে। প্রতিটি টিমে থাকবেন ৪ থেকে ৫ জন। তাঁদের কাজ হবে, মাসে দশ দিন অন্তত ৫টি করে বাড়িতে যাওয়া। বাড়ি ম্যাপ করা থাকবে। এই কাজের বাইরেও অন্তত ২ ঘণ্টা করে দলকে সময় দিতে হবে। তবে সব কাজ শুরুর আগে ৩ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত সবাইকে অবগত করতে হবে জেলার রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক প্রধানদের।

Related Articles