এলাকার বিভিন্ন বাড়ি ও হোটেলে ফাটল ধরতে দেখা গিয়েছিল গত ২ জানুয়ারি থেকেই। সেই ফাটল ক্রমশ চওড়া হয়েছে। ভেঙে পড়েছে পরিত্যক্ত মন্দির। আতঙ্কে প্রবল ঠান্ডার মধ্যেই বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন সেখানকার ৬০০টি পরিবার। এলাকার মানুষ বারবার দাবি করছিলেন, বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে জোশীমঠ। রবিবার রাতে স্থানীয়দের সেই দাবিতে সরকারি সিলমোহর পড়ল। নোটিস জারি করে উত্তরাখণ্ড সরকার জানিয়ে দিল, ‘‘বসবাসের জন্য উপযুক্ত এবং নিরাপদ নয়’’ জোশীমঠ। উত্তরাখণ্ড সরকারের তরফে ‘বিপর্যয়গ্রস্ত’ তকমাও দেওয়া হয়েছে হিমালয়ের কোলে ছোট্ট এই পাহাড়ি জনপদকে।
রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব রঞ্জিতকুমার সিংহ জানিয়েছেন, ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ২৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, জোশীমঠ পৌর অঞ্চলের সব এলাকাকেই ‘বিপর্যস্ত’ তকমা দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের একটি দল বিপর্যস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। তাঁদের দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আরও বড় বিপর্যয় ঘটতে পারে ওই অঞ্চলে। তাই তড়িঘড়ি ওখান থেকে সব বাসিন্দাকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। জানা গিয়েছে, গোটা এলাকাকে ২টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। নতুন করে ওই এলাকায় কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের একটি বড় বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চালিয়ে যাবে। বাসিন্দাদের অন্যত্র পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ৭টি হোটেল ভাড়া করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
কিন্তু হোটেলে পুনর্বাসন তো সাময়িক। পাকাপাকি ভাবে কোথায় যাবেন জোশীমঠের বাসিন্দারা? সরকারের একটি সূত্রের খবর, জোশীমঠকে ‘বিপর্যয়গ্রস্ত’ এলাকা ঘোষণা করার ফলে, বাসিন্দারা বিমার টাকা বা অন্যান্য সুযোগসুবিধা পেতে পারবেন। এরই মধ্যে রবিবার উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামিকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জোশীমঠের কীভাবে পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে, তা জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি জোশীমঠের বাসিন্দাদের জন্য সব রকম সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
চামোলির জেলাশাসক হিমাংশু খুরানা জানিয়েছেন, আকস্মিক বিপর্যয়ে অনেক বাসিন্দাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাই সরকারের তরফে মনোবিদদের একটি দলকে পাঠানো হচ্ছে।