সিপিএমের হোলটাইমার হয়েও “কোন নীতিতে” ২২ লাখি গাড়ি ব্যবহার করেন শতরূপ ঘোষ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কুণাল ঘোষ। কিন্তু দিলেও বাবার টাকায় শতরূপের 22 লাখ টাকার গাড়ি কেনা নিয়ে নীতিগত প্রশ্ন তুলেছিলেন কুণাল। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণালের বিরুদ্ধে পাল্টা আলিমুদ্দিনে বসে সুর চড়ান শতরূপ। বাবা তুলে আক্রমণ করেন কুণালকে। কখনও তাঁকে “টেস্ট টিউব বেবি” বলেন, আবার কখনও তাঁর বাবার “বেনামী সন্তান” আছে বলে তোপ দাগেন। এরই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শতরূপ ঘোষ, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করলেন কুণাল ঘোষ। বুধবার তাঁর সেই মামলা বিচারযোগ্য বলে গ্রহণ করল আদালত। বুধবার কলকাতার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে মামলার শুনানি হয়। কলকাতার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পর্যবেক্ষণ, “এটি ক্রিমিনাল কেস।”
কুণাল ঘোষের উপস্থিতিতেই এদিন আদালতে তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী। আদালতে অয়ন বলেন, “কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে এই কুৎসা পার্টি অফিসে বসে হয়েছে। তাই এর দায় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে নিতে হবে। তাঁরা পরে এসব কথার নিন্দা করেননি, উল্টে সেলিম খোলাখুলি সমর্থন করেছেন শতরূপকে। ফলে এঁদের ক্ষেত্রেও ধারাগুলি প্রযোজ্য।” পুরো শুনানির পর বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে বিচারযোগ্য বলে রায় দেন। মামলার পরবর্তী শুনানি চলবে ১৯ নম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের ঘরে।
আদালত থেকে বেরিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, “আমি কিন্তু একবারও বলিনি শতরূপ দুর্নীতি করে ২২ লাখি গাড়ি চড়ছে। বরং আমি বলেছি, হয়তো বাবার টাকাতেই কিনেছে। আমি প্রশ্ন তুলেছিলাম নীতিগত অবস্থান নিয়ে। কিন্তু যেভাবে শতরূপ আমার বাবা তুলে গালাগালি দিয়েছে, এবং পার্টি অফিসে বসে দিয়েছে, এর দায় নিতে হবে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকেও। সেই কারণেই আমি শতরূপ ঘোষ, বিমান বসু এবং মহম্মদ সেলিমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছি এবং আদালত কিছুক্ষণ আগেই সেই মামলা বিচারযোগ্য বলে গ্রহণ করেছে।”
কুণাল আরও বলেন, “আমার প্রশ্ন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, বিকাশ ভট্টাচার্যদের কাছে, রাজনীতির ময়দানে পারস্পরিক আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ আমরা সবাই করে থাকি, কিন্তু কারুর বাবা তুলে আক্রমণ, টেস্ট টিউব বেবির মত বিজ্ঞানের অগ্রগতিকে অপমান কি আপনারা সমর্থন করেন? অবস্থান স্পষ্ট করুন।” তাঁর আক্ষেপ,,”অনিল বিশ্বাস বেঁচে থাকলে এই ধরণের ঔদ্ধত্য ও কুৎসিত কথাবার্তার নিন্দা করতেন। এসব চলতে দিতেন না।” যদিও খবর লেখা পর্যন্ত এবিষয়ে সিপিএমের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।