Sambad Samakal

Samaresh Majumdar: চোখের সামনে সাহিত্যিক হয়ে উঠতে দেখা বাবলুর প্রয়াণে কোন স্মৃতি চোখে ভাসছে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের?

May 8, 2023 @ 9:10 pm
Samaresh Majumdar: চোখের সামনে সাহিত্যিক হয়ে উঠতে দেখা বাবলুর প্রয়াণে কোন স্মৃতি চোখে ভাসছে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের?

সুশ্বেতা ভট্টাচার্য

সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলা সাহিত্য জগৎ। প্রিয় সাহিত্যিকের মৃত্যুর খবরে শোকাহত বাংলা সাহিত্যের জীবন্ত কিংবদন্তি সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। সোমবার সন্ধ্যায় অ্যাপেলো হাসপাতালে তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের খবর পাওয়ার পর থেকেই একের পর এক স্মৃতিতে ঝাঁপসা হয়ে উঠছে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের দুই চোখ। বললেন, “চোখের সামনে সাহিত্যিক হয়ে উঠতে দেখেছিলাম ছেলেটাকে।”

স্মৃতির জগতে যেন হারিয়ে গেলেন শীর্ষেন্দুবাবু। বললেন, আমি আর সমরেশ, দুইজনেই উত্তরবঙ্গের ছেলে। আমি তখন উত্তর কলকাতার একটি মেস বাড়িতে থাকতাম। ও প্রায়ই আসত আমার কাছে। তখন ও নাটক নিয়েই মেতে থাকত। নাটকের দল চালাত। অসম্ভব প্রাণচঞ্চল, সাহসী ছিল ছেলেটা। প্রাণশক্তি তে ভরপুর ছিল। আর নাটক ছিল ওর প্রাণ। পরে একটা দুটো করে ছোট গল্প লেখা শুরু করল। দু-একটি দেশ পত্রিকায় প্রকাশিতও হল। এরপর লিখল প্রথম উপন্যাস, দৌড়। মনে আছে, বেশ সাড়া পড়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে ওর উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ, গর্ভধারণী, সাতকাহন, মৌষলকাল কালজয়ী হয়ে থাকবে। গোয়েন্দা চরিত্র অর্জুন তাঁর অসামান্য সৃষ্টি। সাহিত্যকৃতির জন্য সাহিত্য আকাডেমি, আনন্দ পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার-সহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন সমরেশ মজুমদার। পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মাননা বঙ্গভূষণে ভূষিত করেছে সমরেশকে।

একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন কিংবদন্তি প্রবীণ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। বললেন, “ভালো লাগল, চোখের সামনে বাবলুকে সাহিত্যিক হয়ে উঠতে দেখলাম। হ্যাঁ, বাবলু। ওর ডাক নাম। আমি ওকে ওই নামেই ডাকতাম। এই সেদিনও বলছিল, এখন একমাত্র তুমিই আমাকে এই নামে ডাকো।”

কিছুক্ষণের নীরবতা কাটিয়ে শীর্ষেন্দুবাবু ফের হারিয়ে গেলেন স্মৃতির অতলে। বিড়বিড় করে বলতে থাকলেন, “আমি থাকি দক্ষিণ কলকাতায়। ওর বাড়ি উত্তর কলকাতায়। ফোন করত আমাকে মাঝে মাঝেই। আমার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিত, লেখার খোঁজ নিত। জানতে চাইত, নতুন কী লিখছি। একসঙ্গে বহু সময় কাটিয়েছি আমরা দুজন। একসঙ্গে একাধিকবার বিদেশেও গিয়েছি।”

আবার একটা দীর্ঘশ্বাস। বললেন, “কয়েকদিন আগেও শুনলাম, বাবলু অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি। সিওপিডির সমস্যা। ভাবলাম, নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যাবে। এই সমস্যা তো কতজনেরই থাকে। কিন্তু বুঝতে পারিনি, এভাবে সব শেষ হয়ে যাবে। বাংলা সাহিত্যে এ এক অপূরণীয় ক্ষতি।”

Related Articles