কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের বিচারে দেশের সেরা পর্যটন গ্রামের স্বীকৃতি পেল এরাজ্যের মুর্শিদাবাদ জেলার কিরীটেশ্বরী। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রের এই ঘোষণা ঘিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই উচ্ছ্বসিত বঙ্গবাসী। ঘরের কাছে থেকেও যাঁদের এখনও কিরীটেশ্বরী দর্শন হয়নি, তাঁদের অনেকেই এবার কিরীটেশ্বরী ভ্রমণের কথা ভাবতে শুরু করেছেন। আর সেই সঙ্গেই এই জায়গাটা সম্পর্কে মনে ভিড় করছে বহু কৌতূহলী প্রশ্ন। কেন যাবেন কিরীটেশ্বরী? কী মাহাত্ম্য সেই বিশেষ স্থানের?
মুর্শিদাবাদের দহপাড়া রেলস্টেশন থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে কিরীটেশ্বরী গ্রাম। এই গ্রামের আদি নাম নবগ্রাম। পরবর্তীতে মন্দিরের নাম অনুযায়ী এই গ্রামের নাম হয় কিরীটেশ্বরী গ্রাম। জনশ্রুতি, দক্ষযজ্ঞের সময় স্বামী ভোলানাথের অপমান সহ্য করতে না পেরে সতী যখন দেহত্যাগ করেছিলেন, তখন সতীর নিষ্প্রাণ দেহ কাঁধে নিয়ে শিবের তাণ্ডবনৃত্য বন্ধ করতে সুদর্শন চক্র চালিয়েছিলেন ভগবান বিষ্ণু। আর সেই চক্রেই খণ্ডবিখণ্ড হয়ে সতীর দেহের ৫১টি অংশ ছড়িয়ে পড়েছিল পৃথিবীর নানা প্রান্তে। যা ৫১ সতীপীঠ হিসেবে পরিচিত। এই ৫১ পীঠেরই অন্যতম মুর্শিদাবাদের কিরীটেশ্বরী। কথিত আছে, এই গ্রামে সতীর মুকুট বা কিরীট পড়েছিল। সেই কারণে দেবীকে ‘মুকুটেশ্বরী’ বলেও ডাকা হয়।
শুধু সতীপীঠ হিসেবেই নয়, সম্প্রীতির মেলবন্ধনেও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এই স্থানের। এখানে মেলে হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতির সুন্দর চিত্র। জানা যায়, ১৪০৫ সালে দেবীর প্রাচীন মন্দিরটি ভেঙে পড়ে। তার পরে উনবিংশ শতকে লালগোলার রাজা দর্পনারায়ণ রায় নতুন মন্দির নির্মাণ করান। পরবর্তী সময়ে মন্দিরের জন্য জমি দান করেছিলেন স্থানীয় মুসলিমদের একাংশ। প্রতি পৌষ মাসে মহামায়ার পুজো উপলক্ষে মন্দির চত্বরের ওই জমিতে মেলা বসে। আয়োজনের মূল দায়িত্বে থাকেন মুসলিমরাই।