আম বাঙালির উইকএন্ড ট্যুর মানেই দিঘা-পুরী কিংবা দার্জিলিং। সমুদ্র আর পাহাড়ের হাতছানি টানে না, এমন বাঙালি খুব কমই আছেন। তবে পাহাড় প্রেমী বাঙালির জন্য এবার মনখারাপের খবর। শৈল শহর দার্জিলিং বেরাতে গেলে এবার থেকে খসাতে হবে বাড়তি গাঁটের কড়ি। পর্যটকদের ওপর পৃথক কর বসাচ্ছে দার্জিলিং পুরসভা। সোমবার দার্জিলিং পুর কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করেছে বিভিন্ন পর্যটক সংস্থা থেকে শুরু করে হোটেল মালিক, এমনকী বছরভর পর্যটকদের পর নির্ভর করে থাকা ছোট বড় বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। পুরসভার এই সিদ্ধান্ত আদতে দার্জিলিংয়ের পর্যটন শিল্পে আঘাত হানবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
পুরসভার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই বিভিন্ন হোটেল মালিক ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এলাকার হোটেলগুলিতে করের কুপনও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। দার্জিলিংয়ের পুরপ্রধান দীপেন ঠাকুরি বলেন, ‘‘মূলত জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্যই এই কর নেওয়া হবে। এই করের বিষয়টি নতুন কিছু নয়। এর আগে ৩০ বছর ধরে দার্জিলিংয়ে এই কর চালু ছিল। জিএনএলএফ-এর আমলে ও বিমল গুরুংয়ের আমলেও এই কর নেওয়া হয়েছে । মাঝের কয়েকটি বছর পর্যটকদের থেকে ওই কর নেওয়া বন্ধ হয়েছিল। আবার তা চালু করা হল। আসলে শহরের জঞ্জাল পরিষ্কার করতে অনেক খরচ হচ্ছে পুরসভার। সেই কারণেই বাধ্য হয়ে আবার এই কর ফিরিয়ে আনা হল। পাহাড়ে পর্যটকদের সুষ্ঠু পরিষেবা দিতেই এই সিদ্ধান্ত।’’
তবে কোনোরকম আলোচনা ছাড়াই পুরসভার এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পর্যটন সংস্থাগুলি। আগেও এই কর নেওয়া হত বলে স্বীকার করে নিয়েছেন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট স্যানাল। তবে তিনি বলেন, ‘‘ এটা নতুন কিছু নয়। তবে মাঝে বহু বছর তা বন্ধ ছিল। আমরাও একটা বিজ্ঞপ্তি পেয়েছি। কিন্তু বিস্তারিত কিছুই জানি না এখন। হোমস্টে বা হোটেলের ক্ষেত্রে কী ভাবে এই নিয়ম কার্যকর করা হবে, সে বিষয়ে এখনও পুরোপুরি অবগত নই। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সকলের সঙ্গে বৈঠক করলে হয়তো ভাল হত।”
কিন্তু পুরসভাকে ঠিক কত টাকা কর দিতে হবে দার্জিলিংয়ে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের? পুরপ্রধান দীপেন ঠাকুরি জানিয়েছেন, “আগে যেমন করের অঙ্ক ২০ টাকা ছিল, এখনও তা-ই রাখা হচ্ছে। এক্ষেত্রে করের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়নি।”