সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগেই নাম না করে উত্তর কলকাতার সাংসদ তথা লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। আর শুক্রবার সন্ধ্যেয় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সরাসরি নাম করে সুদীপকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানালেন তিনি। উত্তর কলকাতার ‘শেখ শাহজাহান’ বলেও ভূষিত করলেন সুদীপকে!
যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেল থেকে তৃণমূল মুখপাত্র ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের ‘বায়ো’ সরানোর পরেও নয়া পোস্টে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, “আমি তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদে থাকতে চাইছি না। সিস্টেমে আমি মিসফিট। আমার পক্ষে কাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমি দলের সৈনিক হিসেবেই থাকব। দয়া করে দলবদলের রটনা বরদাস্ত করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার নেত্রী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সেনাপতি, তৃণমূল কংগ্রেস আমার দল।”
এদিন সরাসরি উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে কুণাল বলেন, “সন্দেশখালির শাহজাহানের বিরুদ্ধে এতদিন কিছু জানা যায়নি বলে বলা হচ্ছিল, কিন্তু উত্তর কলকাতার শাহজাহান কী করছেন তা দলীয় নেতৃত্ব জানেন। দল জমিদারি হটানোর স্লোগান দিচ্ছে, আর কেউ কেউ পার্টিটাকে বাপের জমিদারি ভাবছে।”
সুদীপকে সরাসরি ‘বিজেপির লোক’ বলে অভিহিত করে কুণালের দাবি, “উত্তর কলকাতায় এবার পদ্মফুল বনাম পদ্মফুলের লড়াই হবে। সুদীপ ব্যানার্জী দাঁড়াবেন জোড়াফুলের হয়ে। কিন্তু আসলে তিনি পদ্মফুলের লোক। তাঁর ব্যক্তিগত সচিবের পুত্রকে দিল্লিতে দরবার করে বিজেপির জেলা সভাপতি করেছেন। বিজেপিটা’তো উনিই চালান। আসলে এক নেতা, যাকে উনি দেখতে পারেননা, সে কাউন্সিলর হয়ে গেছে। বিজেপিতে চলে গেছে। তাই এসব করছেন।”
উত্তর কলকাতার তৃণমূল কংগ্রেস প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, “এখানে যা হচ্ছে, তা দলের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়। ক্যালকাটা বয়েজ় স্কুলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ঘর দখল করে নিজের অফিস চালাচ্ছেন। ওঁকে নাকি কোন মিশনারিরা অনুমতি দিয়েছে।একটা স্কুলে কীভাবে রাজনীতির আখড়া চলতে পারে!”
প্রসঙ্গত, এই প্রথম কুণাল নন, এর আগেও উত্তর কলকাতার আরও এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা, বর্তমানে বরানগরের বিধায়ক তাপস রায়ও সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন। এখন দেখার শেষপর্যন্ত সুদীপের বিরুদ্ধে উত্তর কলকাতার নেতাদের একাংশের এই বিদ্রোহ কোন ফর্মুলায় সামাল দেয় তৃণমূল কংগ্রেস।