ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে ব্যারাকপুর থেকে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে ‘শকড’ হয়েছিলেন বর্তমান সাংসদ অর্জুন সিং। তখন থেকেই তাঁর ফের দল বদলের সম্ভাবনা তীব্র হচ্ছিল। মঙ্গলবার সরাসরিই দল ছাড়ার ইঙ্গিত দিলেন অর্জুন। এমনকী নিজের অফিস “মজদুর ভবন” থেকে সরিয়ে পেলেন মমতা-অভিষেকের ছবিও। স্পষ্টই বললেন, “লড়াই তো হবেই। লড়াই হবে পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে।”
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অর্জুন বলেন, “দল আমার সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করেছে। তৃণমূলে আমার প্রয়োজন ফুরিয়েছে। আমি এখন দলের কাছে আনওয়ান্টেড।ব্রিগেডের মঞ্চে আমার গলায় ছুরি চালানো হয়েছে, আর সেটা আমি দেখেছি। আমার পেছনে দু’জন বিধায়ককে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। একজনই একাজ করতে পারে। আমি তার নাম বলতে চাই না। ব্যারাকপুরের মানুষ আমায় চায়। এবার পার্থ বনাম অর্জুন হবে। ও আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। এখন বাংলা সহ গোটা দেশে মোদিজির হাওয়া বইছে। সিএএ নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে।”
লোকসভার টিকিট না পাওয়া অর্জুনের মান ভাঙাতে সোমবারই তাঁকে ফোন করেছিলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তারপরই “বিদ্রোহে”র সুর কিছুটা নরম হয়েছিল অর্জুনের। মঙ্গলবার সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যের সেচ ও জলপথ মন্ত্রী তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের। প্রসঙ্গত, ব্যারাকপুর লোকসভা আসন থেকে এবার তৃণমূলের প্রতীকে লড়ছেন পার্থ ভৌমিকই। কিন্তু তিনি এদিন অর্জুনের সঙ্গে দেখা করতে যাননি। সকালে নৈহাটিতে বড় মার মন্দিরে পুজো দিয়েই তাঁকে রওনা হতে হয়েছে হাবড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সভায়। বড়মার মন্দিরে দাঁড়িয়ে অবশ্য পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, “অর্জুনের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে।” কিন্তু এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অর্জুনের পাল্টা দাবি, “ভুল বলছেন পার্থ ভৌমিক। কোনো ফোন আমার কাছে আসেনি। এমনকী, গতকাল এলাকার একটি সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পার্থকে ফোন করেছিলাম। কোনো রেসপন্স করেনি। আজ সকাল ১০ টায় ওর আসার কথা ছিল। অপেক্ষা করেছি। সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর আপনাদের মুখোমুখি হলাম।”
তাহলে কি এবার বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন? সে বিষয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ অর্জুন সিং। অর্জুন বলেন, “ব্যারাকপুরে আমাকে প্রার্থী করা হবে কিনা, সেটা বিজেপি সংসদীয় দল ঠিক করবে।” তাহলে কি কোনো কথা হয়েছে বিজেপির কারো সঙ্গে? অর্জুনের উত্তর, “বিজেপিতে অনেকেই আমার বন্ধু।” কিন্তু বিজেপি যদি টিকিট না দেয়? অর্জুন জানান, “লড়াই তো হবেই, এবার পার্থর সঙ্গে অর্জুনের লড়াই।” তাহলে কি প্রয়োজনে নির্দল প্রার্থী হয়েই লড়াইয়ের ময়দানে পা রাখবেন অর্জুন? জল্পনা কিন্তু ফের উসকে দিলেন অর্জুন নিজেই।