বন্যা ও ভাঙন বিধ্বস্ত উত্তরবঙ্গ নিয়ে বিজেপি বারবার রাজ্যের শাসকদলের দিকে আঙুল তুলেছে। সোমবার বিধানসভায় তারই পালটা কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে সুর চড়ালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তীক্ষ্ণ ফলায় কেন্দ্রীয় নীতির কড়া সমালোচনা করেছেন মমতা। একইসঙ্গে বিঁধেছেন ডিভিসিকেও।
বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ইন্দো-ভুটান যৌথ নদী কমিশন এবং বাংলার জলবণ্টন নীতি নিয়ে আলোচনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলা নদীমাতৃক দেশ। এরাজ্যে নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে। তাদের জল আমাদের নদীতে এসে মেশে। নৌকোর মতো আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।” মমতার প্রস্তাব, “বিধানসভার একটা প্রতিনিধি দল সেচ মন্ত্রকের সঙ্গে দেখা করে আসুন। মানস ভুঁইয়ার নেতৃত্বে আগে দল গিয়েছিল। আবার একটা দল যাক।” মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে এই প্রস্তাবের কপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বন্যা প্রসঙ্গ তুলে ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “ডিভিসি কোনওদিন বলে না জল ছাড়ার আগে। আমি বহুবার লিখেছি। নীতি আয়োগেও এবার বলে এসেছি। ড্রেজিং করলে ডিভিসি ৩ লক্ষ মেট্রিক টন জল ধরতে পারে। কিন্তু সেসব করে না। জল বাড়তে থাকলে ১০ কিউসেক করে ছাড়তে পারে। কিন্তু সেটা না করে ১০০ কিউসেক একেবারে ছেড়ে দেয়।” রাজ্য বন্যা নিয়ন্ত্রণে কী করেছে, সেই তথ্যও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আমি কিছু চেক ড্যাম করেছি। পুকুর কাটিয়েছি জল ধরো, জল ভরো প্রকল্পে। তাতে কিছু সুরাহা হয়েছে। ২ হাজার ২৩২ কোটি টাকার লোয়ার দামোদর একটা প্রকল্প নিয়েছি।তবে ডিভিসির সংরক্ষণের ক্ষমতা না বাড়ালে উপকার হবে না। আমাদের দাবি পাঞ্চেত, মাইথনে ড্রেজিং হোক। আমি তো শুনছি ডিভিসি বেসরকারিকরণের চেষ্টা করছে। দেশটাকে কোনওদিন বেসরকারি করে দেবে।”
মমতা বলেন, “অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বাংলা বেশি বন্যার কবলে যায়। প্রায় ৪৩ শতাংশ। এটা যেন রুটিন হয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ প্রত্যেকবার সহ্য করে নিচ্ছে। ১৫ বছর ধরে কেন্দ্র বাংলার শেয়ার নেয়। কিন্তু তাকিয়ে দেখে না। দক্ষিণবঙ্গের বাঁকুড়া, নদিয়া, হুগলি জলে ভেসে যায়। এটা কেন্দ্রের দেখা উচিত।”
