Sambad Samakal

Cirrhosis of liver: প্রথমে ধরা পড়লে লিভার সিরোসিস নিরাময় সম্ভব

Sep 16, 2021 @ 11:36 pm
Cirrhosis of liver: প্রথমে ধরা পড়লে লিভার সিরোসিস নিরাময় সম্ভব

প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে জটিল রোগ লিভার সিরোসিস (Cirrhosis of liver) নিরাময় সম্ভব। এমনটাই দাবি যশোদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

লিভারজনিত বিভিন্ন জটিল রোগ এবং সংক্রমণ নিরাময়ে উচ্চ মানের চিকিৎসা পদ্ধতি ও পরিষেবা সরবরাহকারী হায়দ্রাবাদের এই যশোদা হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অফ লিভার ট্রান্সপ্লান্ট অ্যান্ড হেপাটোবিলিয়ারি ডিজিজ বিভাগের চিকিৎসকরা দীর্ঘস্থায়ী যকৃতের রোগ নিরাময় এবং লিভার প্রতিস্থাপনের বিষয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন। হাসপাতালের আন্তঃবিভাগীয় স্বাস্থ্যসেবা দলে রয়েছেন হেপাটোলজিস্ট (লিভার বিশেষজ্ঞ), লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন, ট্রান্সপ্লান্ট কো-অর্ডিনেটর, কাউন্সেলর এবং অ্যানাস্থেসিওলজিস্ট। এঁদের সমবেত প্রচেষ্টায় লিভার প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া সহজ থেকে সহজতর হয়েছে, হয়ে চলেছে।

লিভার সিরোসিস কী?:
লিভারকে আমাদের দেহের দ্বিতীয় প্রধান অঙ্গ বলে মনে করা হয়। এই লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- ফ্যাটি লিভার, লিভার সিরোসিস, হেপাটাইটিস ইত্যাদি। এর মধ্যে সবচেয়ে জটিল ও দুরারোগ্য হিসাবে চিহ্নিত করা হয় লিভার সিরোসিসকে। লিভার সিরোসিস এমন একটি রোগ, যেখানে একজন ব্যক্তির লিভার ধীরে ধীরে অক্ষম হতে শুরু করে। লিভারে সিরোসিস বৃদ্ধি পেতে শুরু করলে রক্তের প্রবাহ হ্রাস শুরু হয় এবং লিভার তার ক্রিয়া ধীর করে দেয়। এর প্রধান কারণ হতে পারে হেপাটাইটিস রোগ বা মদ্যপানে অতিরিক্ত আসক্তি। হৃদরোগ বা ক্রমাগত আঘাত থেকে দীর্ঘদিনের প্রদাহের ফলেও হতে পারে লিভার সিরোসিস।

লিভার সিরোসিস হলে স্বাস্থ্যকর টিস্যুগুলিতে দাগ দেখা দেয়। সিরোসিস যকৃতের স্বাভাবিক কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। ফলে শরীরের ক্ষতিকারক পদার্থগুলি বিষমুক্ত করতে, রক্ত পরিষ্কার করতে এবং গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি তৈরি করতে লিভারের প্রাথমিক কার্যকারিতা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়।

তবে চিকিৎসকরা বারবার বলছেন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে সিরিজ নিরাময় সম্ভব। ফলে সঠিক সময়ে চিকিৎসার জন্য সবার আগে এই রোগের লক্ষণ বা উপসর্গগুলো জানা প্রয়োজন।

লিভার সিরোসিসের লক্ষণ:
হায়দরাবাদের যশোদা হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অফ লিভার ট্রান্সপ্লান্ট অ্যান্ড হেপাটোবিলিয়ারি ডিজিজ বিভাগের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, লিভার সিরোসিসের ফলে অন্যান্য অঙ্গ, যেমন পিত্তনালী, জেনেটিক হজমের ব্যাধি এবং চিনি বিপাক (গ্যালাকটোসেমিয়া) এর সংক্রমণের (শিস্টোসোমিয়াসিস, প্যারাসিটাল সংক্রমণ) প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সিরোসিস হলে ক্লান্তি, রক্তপাত, ত্বকের চুলকানি, জন্ডিস (হলুদ চোখ) ক্ষুধা হ্রাস, পা ফুলে যাওয়া, বিভ্রান্তি এবং তন্দ্রা এবং ত্বকে মাকড়সার মতো রক্তনালীগুলির লক্ষণগুলি দেখা দেয়। তাই এর মধ্যে যে কোনও একটি উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এবিষয়ে সতর্ক করে হায়দরাবাদ যশোদা হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, সিরোসিস কে অবহেলা করে চিকিৎসা এড়ালে ফল মারাত্মক হতে পারে। লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে যা প্রাণঘাতী পর্যন্ত হতে পারে। তাই কোনও উপসর্গ দেখলেই গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট (হজম তন্ত্র) বা হেপাটোলজিস্টের (লিভার) সাথে পরামর্শ করুন।

লিভার সিরোসিসের সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা:
রোগীর উপসর্গ বুঝে ডাক্তার ব্যক্তিগত ইতিহাস, চিকিৎসা ইতিহাস, বিষাক্ত ওষুধের এক্সপোজার, উপসর্গ এবং একটি পারিবারিক ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্য নেবেন। সিরোসিস নির্ণয়ের জন্য, ডাক্তার লিভার ফাংশন টেস্ট (অতিরিক্ত বিলিরুবিন পরীক্ষা), কিডনি ফাংশন টেস্ট (ক্রেটিনিন), হেপাটাইটিস বি এবং সি এবং ক্লটিং টেস্ট সহ পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারেন। ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স এলাস্টোপ্লাস্টি (এমআরই), এমআরআই, সিটি এবং আল্ট্রাসাউন্ড এবং বায়োপসির মতো অন্যান্য পরীক্ষার মতো ইমেজিং পরীক্ষাগুলি কেবল ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষার পরে, হেপাটোলজিস্ট সর্বোত্তম চিকিৎসার বিকল্পগুলির পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর ক্ষেত্রে ওষুধ, অস্ত্রোপচার এবং প্রতিস্থাপন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন যশোদা হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অফ লিভার ট্রান্সপ্লান্ট অ্যান্ড হেপাটোবিলিয়ারি ডিজিজ বিভাগের চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সিরোসিসের লক্ষণযুক্ত রোগীদের বিশেষজ্ঞের ক্রমাগত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। যকৃতের অবস্থা লক্ষ্য করার জন্য নিয়মিত পরীক্ষা নির্ধারিত হয়। সিরোসিসের কারণে লিভার সম্পূর্ণ রূপ কাজ করা বন্ধ করে দিলে তা প্রতিস্থাপন ছাড়া উপায় থাকে না। এটি যকৃতের ক্যান্সারে পরিণত হতে পারে। তাই প্রয়োজন অনুসারে লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে।

Related Articles