স্বপ্নরেখা সেনশর্মা
পুজোর আনন্দে উৎসবে মেতে কোভিডবিধি না মানার মূল্য দিতে হচ্ছে কলকাতা তথা বাংলাকে।
খাস তিলোত্তমায় গত ২৪ ঘণ্টায় উপসর্গহীন নতুন রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় প্রায় পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় মোট আক্রান্ত রোগীর মধ্যে উপসর্গহীন ছিল ৭৭ % , কিন্তু শুক্রবার তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৮৩% শতাংশ হয়েছে। জি ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তর মোট সংখ্যা সামান্য কমে ২৪২ হলেও উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা শতাংশের বিচারে বেড়ে ২০০ জন হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ২১জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য, আক্রান্ত ২৪২ রোগীর মধ্যে ৫০ জন এখনও টিকা নেননি।
বৃহস্পতিবার ভ্যাকসিন না নেওয়ার জেরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৭ জন। পর পর দুদিন টিকাহীন আক্রান্তদের তথ্য ফাঁস করে চারদিন আগে পুরপ্রশাসকদের ১০০ শতাংশ টিকাকরণের দাবি নস্যাৎ করল পুরসভাই। গত সোমবার কলকাতায় ১০০ শতাংশ মানুষের টিকাদান সম্পূর্ণ বলে পুরপ্রশাসক অতীন ঘোষ দাবি করেছিলেন। কিন্তু তাঁর দফতরের তথ্যই তাঁকে ভুল প্রমাণ করে দিল। প্রমাণ হয়ে গেল, বিরোধী দলগুলি শহরে যে ১০/১৫ শতাংশ বাসিন্দার টিকাদান এখনও অসম্পূর্ণ বলে যে দাবি করেছিল, তা অনেকটাই ঠিক।
পুজোর পর কোভিডে আক্রান্ত রোগীর অধিকাংশই বহুতল ও সম্পন্ন পরিবারের বাসিন্দা বলে পুরসভার দাবি। নতুন রোগীদের অধিকাংশই ফ্ল্যাটে এবং দক্ষিণ কলকাতায় থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরের তিন প্রান্তে কলকাতা পুরসভা তিনটি সেফ হোম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য, নতুন রোগীদের অনেকে আবার দ্বিতীয়বার কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন। পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর সদস্য ও বিধায়ক অতীন ঘোষ জানিয়েছেন,”গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত ২৪২ জনের মধ্যে ১৫০ জনের টিকার দুটি ডোজ নেওয়া আছে।” স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫০ জন নানা ধরণের টিকা নিয়েছেন, অথচ কোভিডে আক্রান্ত হলেও উপসর্গহীন আছেন এমন সংখ্যা ১২২। তবে কলকাতার চিকিৎসকরা যে কারণে বেশি উদ্বিগ্ন, তা হল, সর্দি-জ্বর গায়ে ব্যাথা হলেই অধিকাংশ নাগরিক আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাচ্ছেন না। নিজেরাই ওষুধের দোকানে গিয়ে জ্বর-সর্দি-কাশি ও আন্টিওবায়োটিক কিনে খাচ্ছেন।
প্রখ্যাত চিকিৎসক কুণাল সরকার বলছেন, ” ঘরে বসে নিজের চিকিৎসা করালে কো-মর্বিডিটি থাকা রোগীর বড়মাপের বিপদ আসতে পারে, প্রাণহানিও হতে পারে।”