রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলে ফিরতেই স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য তুলে ধরে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘কেউ কথা রাখেনি’ কবিতা শুনিয়ে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটালেন শ্রীরামপুরের ‘ঠোটকাটা’ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত মানতে হবে বলেও তিনি ঘুরিয়ে মমতা-অভিষেকের নাম না করে ‘কেউ কথা রাখেনি’ বলে মন্তব্য করতেই দলের ভিতরে ও বাইরে তীব্র আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। ‘রাজীব টপ টু বটম কোরাপটেড’ বলে মন্তব্য করে কল্যাণ বলেছেন, গত ভোটের সময় মমতাদি ডোমজুড়ে রাজীবের বিরুদ্ধে দলের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন, গড়িয়াহাটে তাঁর (রাজীবের) ৩-৪ টে বাড়ি আছে। প্রচুর টাকার লেনদেন চলে দুবাইয়ে।”
এখানেই থামেননি কল্যাণ, দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদকের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দলের কোনও কর্মীর মনে আঘাত দিয়ে বিশ্বাসঘাতককে দলে ফেরত নেওয়া হবে না। আমি একজন দলের কর্মী। তৃণমূলে থাকতে হলে দলের শীর্ষ নেতারা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তা মানতে হবে। তবে আমি জানি না এরকম একটা ‘টপ টু বটম কোরাপটেড’ লোককে কেন দলে জয়েন করানো হল?” প্রকাশ্যে এমন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দলের ভিতরে ও বাইরে সরাসরি প্রশ্ন তুলে দিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
অবশ্য তৃণমূলে ফেরা নিয়ে স্বয়ং রাজীবের সাফাই, ‘কোথাও হয়তো ভুল করেছিলাম, স্বীকার করছি। একটা অভিমানে হয়তো জেদের বশে, রাগের বশে ঘটিয়ে ফেলেছিলাম। সেদিনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আধ ঘণ্টা ধরে বুঝিয়েছিলেন, কিন্তু সত্যি বলছি, ‘আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত।’
রাজীবের আক্ষেপ ভরা বক্তব্য, “যদি সেদিন তাঁদের কথা শুনতাম তবে আগামী দিনের মানুষের সেবা করায় দিশা আরও ভালো করে দেখতে পেতাম।” দলের মধ্যেই এবার প্রশ্ন উঠেছে, কল্যাণের পাশাপাশি অরূপ রায়দের দাপটে হাওড়ায় রাজীবের দল করা খুবই কঠিন, তা হলে কি আপাতত ত্রিপুরায় তিনি থাকবেন?