Sambad Samakal

দুষ্কৃতীর পাল্টা মানবিক ব্যক্তিত্ব!গণ স্বাক্ষরে গর্জে উঠে পার্থর পাশে নৈহাটি

Jul 17, 2021 @ 3:37 pm
দুষ্কৃতীর পাল্টা মানবিক ব্যক্তিত্ব!গণ স্বাক্ষরে গর্জে উঠে পার্থর পাশে নৈহাটি

তাঁকে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ আখ্যা দিয়ে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়েছে জাতীয় মানবধিকার কমিশন। প্রতিবাদে গর্জে উঠে এলাকার বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের পাশে দাঁড়াল নৈহাটি। গণস্বাক্ষরে অংশ নিয়ে নৈহাটির আমজনতা ও বুদ্ধিজীবীরা পাল্টা স্লোগান তুললেন, ‘মানবিক পার্থ ভৌমিক’। প্রতিবাদের ঝর ওঠে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার তদন্তে নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ বলে অভিযুক্ত করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তারই তীব্র প্রতিবাদে পথে নামল নৈহাটির বুদ্ধিজীবী মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। নৈহাটি পুরসভার ঐকতান প্রেক্ষাগৃহের সামনে নৈহাটি সাংস্কৃতিক সমন্বয়-এর পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে তীব্র ধিক্কার জানানো হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওই রিপোর্ট সামনে আসার পর পার্থ ভৌমিক বলেছিলেন, ‘এমন অভিযোগ যে কতটা হাস্যকর, নৈহাটির মানুষই তার উত্তর দেবেন।’ সত্যিই উত্তর দিলেন নৈহাটিবাসী।
বরাবরই এলাকায় সংস্কৃতির অন্যতম ধারক হিসাবে স্বতন্ত্র পরিচয় রয়েছে নাট্যকর্মী পার্থ ভৌমিকের। প্রতিবাদ সভায় অংশ নেওয়া বুদ্ধিজীবীদের কথায় ঘুরে ফিরে আসে ব্যক্তি পার্থ ভৌমিকের সেই সাংস্কৃতিক ইমেজের কথা। নাট্যসংস্থা নৈহাটি ব্রাত্যজন-এর পরিচালক অরিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নৈহাটি সাংস্কৃতিক সমন্বয়-এর পক্ষে সংগৃহীত এই গণস্বাক্ষর পাঠানো হবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সহ প্রয়োজনীয় সব মহলে।
প্রতিবাদ সভার সভাপতি, নৈহাটি বঙ্কিম-ভবন গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ড.রতন কুমার নন্দী বলেন, ”জানতে পারলাম জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী‘বলে উল্লেখ করেছেন। শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধ ও মূল্যবোধের জন্য পার্থ ভৌমিক বিশেষভাবে পরিচিত। অধ্যক্ষ পিতা এবং শিক্ষিকা মায়ের উচ্চ শিক্ষিত পুত্র পার্থ ভৌমিক সদাচার ও সুনীতির প্রতি আস্হাশীল। এমনকী তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরাও পার্থ ভৌমিকের সম্পর্কে এমন অভিযোগ কখনও করেছেন বলে শুনিনি।” উল্টে ২০১৯ এর লোকসভা ভোট পরবর্তী অশান্ত পরিস্থিতির কথা টেনে এনে রতানবাবু বলেন, ‘বিপক্ষের রাজনৈতিক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগে নৈহাটি তখন আগ্নগর্ভ। সেই পরিস্থিতিতেও নিজের রাজনৈতিক দলের কর্মীদের শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছিলেন বিধায়ক পার্থ। অনেকেই ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে আক্ষেপ করেছিলেন সেদিন। বলেছিলেন, পার্থ ভৌমিক এভাবে চুপ কেন? পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে না তুললে দলীয় কর্মীদের ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু পার্থ ছিলেন অবিচল। আসলে রহরা রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র, আদ্যপান্ত সংস্কৃতিবান পার্থ ভৌমিক পেশিশক্তি নয়, বরাবরই সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে মানুষের স্বার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে পথ চলায় বিশ্বাসী। এরকম একজন মানুষকে কুখ্যাত দুষ্কৃতী আখ্যা দেওয়াটা অত্যন্ত লজ্জার।’
এলাকার আপামর সাধারণ মানুষ থেকে ডান-বাম সব পক্ষের বুদ্ধিজীবীরাই প্রতিবাদে অংশ নেন।
এদিনের প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন সঙ্গীতজ্ঞ রাজা চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষক শান্তনু কুণ্ডু, সুরজিৎ নাথ, নাট্যকর্মী অশোক চৌধুরী, অলোক মিশ্র, দেবাশিস সরকার, সুকদেব চক্রবর্তী, পার্থ বন্দোপাধ্যায়, দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়, নৃত্যশিল্পী অরুন্ধতী ভট্টাচার্য প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন শোভনলাল রাহা।

Related Articles