মুখে মাস্ক না রাখলে কী কী সরকারি বিধিনিষেধ ও কড়া ব্যবস্থা জারি হচ্ছে, তা জানিয়ে দিল কলকাতা পুরসভা। শুধু তাই নয়, কেউ যদি মাস্ক ছাড়া শহরের রাস্তায় হকারি করতে বসেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ সরাসরি কী কী দৃষ্টান্তমূলক ব্যাবস্থা নেবে, তাও বিশেষ পুলিশ কমিশনার শুভঙ্কর সরকারকে নিয়ে বসে চূড়ান্ত করেছেন মুখ্য প্রশাসক ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।।
বৈঠক করে এসে বেরিয়ে ফিরহাদ জানিয়েছেন, উপসর্গহীন করোনা সংক্রমণ রুখতে শহরে মাস্কহীন ক্রেতা—বিক্রেতা উভয়ই কার্যত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল। শুধু তাই নয়, ফুটপাতে বা বাজারের বাইরে যে সমস্ত মাছ—সবজি বিক্রেতা বা হকার বসছেন তাঁদের দোকান সাজিয়ে বসার ক্ষেত্রেও এবার থেকে মাস্ক বাধ্যতামূলক করলো পুরসভা। যদি কোনও হকার বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাস্ক ছাড়া পণ্য নিয়ে বসেন তবে তাঁকে ফুটপাত থেকে তুলে দেবে পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল কমিশনাররের উপস্থিতিতে কোভিড রিভিউ কমিটির বৈঠকে উপসর্গহীন করোনা সংক্রমণ রুখতে এমনই কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, “নিউমার্কেট, পুরসভার বাজার থেকে শুরু করে বেসরকারি মার্কেট, শপিং মল সর্বত্রই ‘নো মাস্ক, নো নো—এন্ট্রি’ বোর্ড বড় বড় করে টাঙানো হচ্ছে। উপসর্গহীন কোভিড রুখতে বাজার থেকে ফুটপাত, সর্বত্রই ক্রেতা—বিক্রেতা উভয়েরই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।”
শহরের বাজার ও শপিং মলের পাশাপাশি কেনাকাটার মূল ক্ষেত্র থেকেই উপসর্গহীন কোভিড অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত। তবে এখনই পুরোপুরি কোভিড নির্মূল হবে না, তাই মাস্ক পরার পাশাপাশি টিকার দু’টি ডোজ নেওয়া থাকলে বিপদ অনেকটাই কম হবে বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যপ্রশাসক।
কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জোন হবে না ঠিকই, কিন্তু বরো ১০, ১১, ১২ জোনে সংক্রমণ রুখতে আক্রান্তদের ফ্ল্যাট বা বাড়িকে ঘিরে কিছু মাইক্রো—কন্টেনমেন্ট চালু করছে পুরসভা। দক্ষিণ কলকাতার ১০৭, ১০৮, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে সংক্রমণের সংখ্যা বেশি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন ফিরহাদ। উপসর্গহীন নয়া আক্রান্তদের ‘মেডিক্যাল হিস্ট্রি’ সংগ্রহ করে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, “আবাসনের বহুতলের লিফট, কমিউনিটি হল ও জিম থেকে উপসর্গহীন কোভিড সংক্রমিত হচ্ছে। কারণ, উপসর্গহীনরা মাস্ক ছাড়া যেমন কমিউনিটি হলে গল্প—আড্ডা দিচ্ছে, তেমনই লিফটে ভিতরে ওঠা সংক্রমিতের হাঁছি—কাশি থেকে বহুতলে নানা পথে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে।”