স্রেফ মানবিকতার খাতিরে প্রায় এগারো লক্ষ রোহিঙ্গাকে দেশে আশ্রয় দিয়ে এবার হাত কামড়াচ্ছেন স্বয়ং শেখ হাসিনা। কারণ, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলি এখন কার্যত জঙ্গিদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে।
রমরমিয়ে চলছে মাদক পাচার ও অস্ত্র আমদানি। উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ায় ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) সংগঠনের কার্যালয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লা। হামলার নেপথ্যে মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’ জড়িত বলে অনুমান। বস্তুত এই কারণে এবার কক্সবাজারে পৌঁছে পুলিশের এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোহিঙ্গা শরনার্থীদের চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আসলে যারাই মায়ানমারে ছিল কুখ্যাত জঙ্গি নেতা বা তাদের বাহিনীর সদস্য, তারাই বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে ঢুকে ভোলবদলে নানা সন্ত্রাসবাদী অপরাধ শুরু করেছে।
জঙ্গি কার্যকলাপে উদ্বেগ প্রকাশ করে নজিরবিহীন কড়া আইনি ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসাদুজ্জামান বলেছেন, “রক্তপাতে মেতে উঠবেন না। আশ্রয় নিয়েছেন, থাকছেন, ভালভাবে থাকবেন। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিহার করুন। না হলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদক পাচার বন্ধ না করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, “বাংলাদেশ আগের মতো তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, এখন স্বপ্নের দেশ। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কক্সবাজার দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী। পর্যটনের জায়গায় রক্তের হোলি খেলা শুরু করেছে দুর্বৃত্তরা। তাদের দমনে পুলিশকে কঠোর হতে হবে। কক্সবাজারে এসব চলতে পারে না। কারণ, এটি দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন।”
গত বছর তিনেক ধরেই শরণার্থী শিবিরে বসে তোলাবাজি-ডাকাতি, অস্ত্র ব্যবসা, কিশোরী-তরুণীদের হোটেলে পাঠিয়ে দেহব্যবসা ও পাচারের মতো অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা। এদের জ্বালায় অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারাও। এমনকী, কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশের পাহাড়ে গড়ে তুলেছে অস্ত্র তৈরির কারখানা। এবার তার সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী র্যাব।