শিক্ষকদের ক্ষোভের মুখে কমতে পারে স্কুলের সময়সীমা। সূত্রের খবর, শনিবার বিকাশ ভবনে এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়।
দীর্ঘ ২০ মাস পর গত ১৬ নভেম্বর, মঙ্গলবার থেকে খুলে গিয়েছে রাজ্যের স্কুল-কলেজ। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে ক্লাস শুরু হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে এই চারটি ক্লাসের পড়ুয়াদেরও শিফট ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে অন্য সময় সকাল ১১ টায় ক্লাস শুরু হলেও এখন কিন্তু স্কুল শুরু হচ্ছে সকাল সাড়ে ন’টায়। আবার চলছে টানা বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত। স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষক শিক্ষিকাদের সকাল ৯টা ১৫-র ভিতর স্কুলে পৌঁছতে হচ্ছে। এমনকী, শনিবারও হাফ ছুটির পরিবর্তে পুরো সময় স্কুল হচ্ছে। আর বাড়তি অনেকটা সময় স্কুলে থাকা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, নতুন এই নিয়মের জেরে নাজেহাল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে, যাঁরা অনেকটা দূর থেকে তিন-চার ঘণ্টার পথ পেরিয়ে স্কুলে আসেন, সকাল ৯ টা ১৫ মিনিটে হাজিরা দিতে তাঁদের ভোর পাঁচটা-ছ’টায় বাড়ি থেকে বেরোতে হচ্ছে। যা দীর্ঘদিন সম্ভব নয়। অথচ স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ থাকলেও এইসব শিক্ষক শিক্ষিকারা কিন্তু গত ২০ মাস ধরেই নিয়ম করে মাসের বেশ কয়েকদিন স্কুলে এসেছেন, মিড ডে মিল বিতরণ করেছেন, রেজাল্ট তৈরি করেছেন, রেজিষ্টারে নাম তুলেছেন, আবার বাড়িতে থাকলেও নিয়ম করে অনলাইন ক্লাসও করিয়েছেন। তাই স্কুলে পঠন পাঠন শুরু হওয়ার পর রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার বিরোধিতায় ক্রমেই ফুঁসতে শুরু করেছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। সেই ক্ষোভের আঁচ পৌঁছেছে স্কুল শিক্ষা দফতরেও। আর তাই এবার স্কুলের সময়সীমা কমানোর ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
সূত্রের খবর, এবিষয়ে একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের আবেদন জমা পড়েছে শিক্ষা দফতরে। এসেছে সময়সীমা কমানোর প্রস্তাব। প্রধান শিক্ষকদের যুক্তি, শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও দীর্ঘ সময় ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে রাখতে চাইছেন না। তাছাড়া অনেকদিন একটানা বাড়িতে থাকার পর পড়ুয়ারাও এতটা সময় স্কুলে থাকতে গিয়ে অনেক বেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। অনেক পড়ুয়া স্কুলে না আসায় একেক শিফটে অনেক কম সংখ্যক পড়ুয়া ক্লাস করছে। এই অবস্থায় তাই স্কুলের সময়সীমা কমানোর প্রস্তাব জমা পড়েছে শিক্ষা দফতরে। সেই প্রস্তাব নিয়ে শনিবার পর্যালোচনা হল বিকাশ ভবনে। যদিও এবিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও বিবৃতি এখনও জারি হয়নি। তবে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহ থেকেই কমতে পারে স্কুলের সময়সীমা।