টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন কলকাতা। আর তাই শহরের জমা জল সংকট মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মাঠে নামলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদি স্বয়ং। কলকাতার মুখ্য পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে আলোচনা করে দুর্ভোগ মেটাতে কমিটি গড়েন মুখ্যসচিব। কমিটির মাথায় বসানো হয় রাজ্যের সেচ সচিবকে। দায়িত্ব পেয়েই শনিবার দুপুরে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই শহরের বিভিন্ন খাল পরিদর্শন করলেন সেচ সচিব প্রভাত মিশ্র।
বৃষ্টির জমা জলে শহরবাসীর দুর্ভোগের ছবি দেখে বৃহষ্পতিবার রাতেই কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ফিরহাদ মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সেচমন্ত্রী থাকাকালীন বারবার বলেও সেচ বিভাগের পক্ষ থেকে শহর ঘিরে থাকা ড্রেনেজ ক্যানেলগুলির সংস্কারের কাজ হয়নি। তাই জমা জল আটকে যাওয়ায় বানভাসী হয়েছে তিলোত্তমা। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলেন এবং সংকট মেটানোর নির্দেশ দেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় নবান্নে বৈঠক ডাকেন মুখ্যসচিব। সেচ সচিব প্রভাত মিশ্র ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতা পুরসভার কমিশনার। ওই বৈঠকেই সমস্যা মেটাতে সেচ সবিবের নেতৃত্বে কমিটি গড়ে দেন মুখ্যসচিব। কমিটিতে রাখা হয় কলকাতা পুরসভার কমিশনার, কলকাতা বন্দর ও মেট্রো রেলের প্রতিনিধিদের।
শনিবার দুপুর ২ টোয় কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টির মধ্যেই ছাতা মাথায় দিয়ে খাল পরিদর্শনে বের হন সেচ সচিব। মোট আটটি খালের মধ্যে এদিন তাঁরা মনি ও কেটিপি খাল দুটি পরিদর্শন করেন। বাকি ছয়টি খাল রবিবার ঘুরে দেখবেন তাঁরা। তারপর সোমবার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেবেন।
এদিন পুরসভায় ফিরহাদ বলেন, ‘কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে শহরবাসীকে জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে পাম্পগুলি লাগাতার চালানোর পাশাপাশি নিচু এলাকাগুলিতেও ভ্রাম্যমাণ পাম্পসেট বসিয়ে সেচের কাজ চালানো হচ্ছে। বেহালা, ঠাকুরপুকুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ চলছে ।’ তাঁর অভিযোগ, ‘আগের দুই সেচমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে বারবার কথা বলে সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা করা হলেও কার্যত তাঁদের গড়িমসির কারণে সেচ দফতরের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া যায়নি। তিন বছর ধরে বিভিন্ন খালের সংস্কার থমকে থাকায় জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলেনি। ‘ মুখ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সেচমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই সমস্ত বকেয়া কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে, স্থায়ীভাবে মানুষের জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি ঘটবে বলেও এদিন জানান ফিরহাদ হাকিম।