তিনি চিটফান্ডের সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। শনিবার আদালতে এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন হালিশহরের চেয়ারম্যান রাজু সাহানি। আর তারপরেই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা, কারা ফাঁসালেন রাজুকে?
শুক্রবারই চিটফান্ড কাণ্ডে রাজু সাহানিকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁর নিউটাউনের ফ্ল্যাট ও হালিশহরের রিসোর্টে হানা দিয়ে নগদ ৮০ লক্ষ টাকা ও একটি লাইসেন্স বিহীন আগ্নেয়াস্ত্রও বাজেয়াপ্ত করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা। শনিবার আদালতে সিবিআই দাবি করে, সন্মার্গ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামের চিটফান্ডের সঙ্গে রাজুর গভীর সংযোগ ছিল। ২০১৪ সালে প্রথম এই চিটফান্ড সংস্থার বিরুদ্ধে কুলটি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। বাজার থেকে তারা ১০০ কোটি টাকা তুলেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল সেই সময়। ওই চিটফান্ড সংস্থা থেকে রাজু সরাসরি লাভবান হয়েছেন বলেও দাবি গোয়েন্দাদের। তাঁরা জানিয়েছেন, চিটফান্ড সংস্থার মালিকের কাছ থেকে ‘প্রোটেকশন মানি’ গ্রহণ করতেন রাজু।
যদিও আদালতে রাজুর আইনজীবীর দাবি, তাঁর তাঁর মক্কেলের চরিত্রহননের চেষ্টা চলছে। আইনজীবীর ব্যাখ্যা, রাজু একজন ব্যবসায়ী, একটি রাজনৈতিক দল করেন। তিনি পুরসভার চেয়ারম্যান। তাঁর কাছে টাকা থাকা অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। তাঁর যুক্তি, কে বাড়িতে কত টাকা রাখতে পারেন, ভারতে সেই ধরনের কোনও আইনও নেই। সাংবাদিকদের সামনে রাজুও নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। রাজু বলেন, “আমি কোনও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।” আর তারপরেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় চাপানউতোর।
এলাকার একসময়ের দাপুটে সিপিএম নেতা তথা হালিশহর পুরসভার প্রাক্তন উপপুরপ্রধান প্রয়াত লক্ষ্মণ সাহানির ছেলে রাজু সাহানিকে তাঁর দল তৃণমূলেরই একাংশ ফাঁসাচ্ছে বলে অভিযোগ বামেদের। সূত্রের খবর, রাজুর গ্রেফতারির ঘটনার পর শনিবার পুরসভায় বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর ও তৃণমূল ঘনিষ্ঠ কর্মীদের একাংশকে বেশ খোশ মেজাজেই দেখা গেছে। স্থানীয় সিপিএম সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজুকে হালিশহরের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিমানিশ ভট্টাচার্যকে ওই পদে বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তৃণমূলের অন্দরে। কিন্তু একালায় দক্ষ প্রশাসক হিসেবে “জনপ্রিয়” রাজুকে কীভাবে সরানো হবে, তা নিয়ে ধন্দ ছিল। তাই তাঁকে ফাঁসানো হতে পারে বলে মনে করছেন এলাকার বাম নেতৃত্বের একাংশ। যদিও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তৃণমূলের।