Sambad Samakal

বিচারপতির কড়া প্রশ্ন, সিংভির সাওয়ালে কোণঠাসা সিবিআই

May 20, 2021 @ 12:47 pm
বিচারপতির কড়া প্রশ্ন, সিংভির সাওয়ালে কোণঠাসা সিবিআই

বুধবার নারদ মামলার শুনানি ঘিরে সকাল থেকেই ছিল টানটান উত্তেজনা। দুপুরে শুরু হয়
নারদ মামলায় শুনানি। আর সেই শুনানিতে একদিকে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একের পর এক প্রশ্নবাণ, আর অন্যদিকে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভির ক্ষুরধার যুক্তি সম্পন্ন সওয়ালের মাঝে পড়ে কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়ে সিবিআই। এরপর শুনানি শেষে আদালতের বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ফিরহাদ হাকিমদের আইনজীবীরা। ফিরহাদদের গ্রেফতারি কেন বেআইনি, কেন তাঁদের জামিন পাওয়া উচিত, কেন এই গ্রেফতারিকে আইনজীবীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে ব্যাখ্যা করছেন, কেনই বা ভিনরজ্যে মামলা সরাতে চেয়ে সিবিআইয়ের আবেদন কেন যুক্তিহীন, সবেরই ব্যাখ্যা দিল টিম সিংভি।
আইনজীবীদের প্রশ্ন, এই মামলার চার্জশিট ইতিমধ্যেই পেশ হয়ে গিয়েছে। আর তদন্তের প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। কাজেই তদন্তে প্রভাব খাটানোর প্রশ্ন ওঠে না। অথচ সেই যুক্তিতেই আটকে রাখা হচ্ছে চার নেতা এবং মন্ত্রীকে! টিম সিংভির অভিযোগ, কৌশল করেই বন্দি রাখা হচ্ছে রাজ্যের চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীকে।
এদিন শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি একের পর এক কড়া প্রশ্ন করতে থাকেন সিবিআই আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাকে। ধৃত চার হেভিওয়েটকে জেলে আটকে রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। সিবিআইকে তাঁর প্রশ্ন, ‘এই মামলার চার্জশিট পেশ হয়ে গিয়েছে। এর আগেও অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীরা কি তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন? তাহলে এই করোনা কলে তাঁদের জেলে আটকে রাখার যৌক্তিকতা কী?’ রাজ্যের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নষ্ট করে মামলাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ আনে সিবিআই এবং সেই যুক্তিতেই মামলা ভিন রাজ্যে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানায়। এই প্রসঙ্গেই বিচারপতি জানতে চান, অভিযুক্তরা কি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরিতে উস্কানি দিচ্ছেন? এক্ষেত্রে তাঁদের অবস্থান কী? অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী সিংভি জানান, চেতলার বাড়ি থেকে ফিরহাদ হাকিমকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসার সময় তাঁর অনুগামীরা বিক্ষোভ দেখলে গাড়ি থেকে নেমে নিজে তাঁদের শান্ত করেন পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আইনি পথে লড়াইয়ের বার্তা দেন, কোভিড প্রটোকল মেনে চলতে বলেন। তৃণমূল উচ্চ নেতৃত্বও এক্ষেত্রে একই অবস্থান নেন। তাই এরপর সিবিআইয়ের মামলাকে প্রভাবিত করার যুক্তি অন্ত:সার শুন্য ও ভিত্তিহীন। সিবিআই অকারণে জটিলতা তৈরি করেছে। নিজাম প্যালেসে বিক্ষোভের ঘটনাটিকে জামিনের শুনানির সঙ্গে জুড়ে মামলাটিকে এমন ভাবে তারা উপস্থাপন করেছে, যেন মনে হচ্ছে রাজ্যে মামলাটির তদন্তে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করা হবে। যেখানে মামলাটির পরবর্তী তদন্তের প্রয়োজন নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন তদন্তকারী অফিসার, সেখানে এমন যুক্তি কেন সাজানো হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা।

তৃণমূলের তরফেও দাবি
করা হয়, ভোটে হেরে গিয়ে এলাকাকে অশান্ত করতেই বিজেপির এই কৌশল। যদিও বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাফ জানান, ‘এই ঘটনার সাথে বিজেপির কোনও যোগ নেই। আইন আইনের পথে চলছে। অযথা এর সঙ্গে বিজেপির নাম জড়ানো হচ্ছে।’

Related Articles