করোনায় আশঙ্কাজনক হয়ে ১৫ দিনেরও বেশি সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও এতদিন মুকুল পত্নীর খোঁজ নেননি বিজেপি নেতৃত্ব। অথচ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যায় তৃণমূলের রাজ্য যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুকুল পত্নীকে দেখতে যান। আর তারপরেই পাল্টা তৎপরতা শুরু হল গেরুয়া শিবিরে। চাপে পড়ে এবার ছোটাছুটি শুরু করেছে বিজেপি শিবির। রাতেই মুকুল জায়া কৃষ্ণা রায়কে দেখতে কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে হাজির হন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এরপর রাজ্য নেতৃত্বের তরফে যোগাযোগ করা হয় দিল্লিতে। আর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আসরে নামলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে। এদিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ মুকুল রায়কে ফোন করেন বিজেপির শীর্ষ নেতা। কৃষ্ণাদেবীর শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ খবর নেন মোদি। সব পরিস্থিতিতে পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি যে কোনও প্রয়োজন ও সমস্যার বিষয়ে অকপটে জানানোর কোথাও বলেন।
গেরুয়া শিবিরের আচমকা এই তৎপরতা নজর কেড়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের একাংশ বলছেন, এর আগেও একাধিক ক্ষেত্রে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসের অনুকরণ বা অনুগমন করতে দেখা গিয়েছে বিজেপিকে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। অভিষেক হাসপাতালে পৌঁছে ভেন্টিলেশনে থাকা মুকুল পত্নীর খোঁজ খবর নিতেই তাই ঘুম ভাঙল দিলীপবাবুদের। তবে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বুধবার অভিষেকের সঙ্গে শুভ্রাংশুর কথা হলেও দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা বা কথা হয়নি মুকুলপুত্রের। আবার দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পরিবারের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েও নরম সুরে কথা বলতে শোনা গেল রাজ্য বিজেপি সভাপতিকে। দিলীপ বলেন, বিপদের দিনে সবাই সবার পাশে দাঁড়ালে ভালো। এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
এদিকে বিজেপির এই আচমকা তৎপরতা নিয়ে এদিন কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের অন্যতম নেত্রী, মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের যুবনেতার করা কাজ দেখে বিজেপির পাকা চুল-দাড়িওয়ালা লোকেদের ঘুম ভাঙছে। আসলে বিজেপি শুধুই রাজনীতি করে। ওরা সৌজন্য, সামাজিকতা শব্দগুলোর মানেই বোঝে না।’