Sambad Samakal

শুভেন্দুর ৩৫৬ নিয়ে প্রকাশ্য বিরোধিতা রাজীবের, পাল্টা সৌমিত্র খাঁর

Jun 9, 2021 @ 5:50 pm
শুভেন্দুর ৩৫৬ নিয়ে প্রকাশ্য বিরোধিতা রাজীবের, পাল্টা সৌমিত্র খাঁর

মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়ের পর এবার বেসুরো রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্যের নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে দেওয়া এবং শুভেন্দুর ৩৫৬ ধারা জারির দাবির বিরোধিতা করে মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন তিনি। যা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। এদিকে, রাজীবের পোস্টের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মুখ রাখতে আসরে নামে বিজেপি। দলের রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ পালটা কড়া আক্রমণ শানান রাজীবের বিরুদ্ধে। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, মন্ত্রিত্ব ছাড়া থাকতে পারেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মন্ত্রিত্ব না পেয়েই এত ‘কান্নাকাটি’ শুরু করেছেন রাজীব।

এদিন দুপুরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করে বাংলায় ৩৫৬ ধারা জারির দাবি জানান। তার কিছুক্ষণ পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ৩৫৬ ধারা জারির দাবির বিরোধিতা করে পোস্ট করলেন রাজীব। এমনিতেই মঙ্গলবার দুপুরে হেস্টিংসে বিজেপির ভোট পরবর্তী পর্যালোচনা বৈঠকে রাজীবের গরহাজির থাকা নিয়ে জল্পনা ছিলই। এরপর বিকেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজীবের এই পোস্ট তাঁর তৃণমূলে ফেরার সেই জল্পনা উসকে দেয় আরও কয়েকগুণ। যা নিয়ে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ সর্বত্র, তৃণমূল থেকে বিজেপি, দুই শিবিরেরই এদিন মুখ্য আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে, কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালোভাবে নেবে না। আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড ও ইয়াস, এই দুই দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।’ রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ফের তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন রাজীব। এদিকে আবার রাজীবের এই পোস্টের পর পালটা তোপ দেগেছেন বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। তাঁর কটাক্ষ, ‘মন্ত্রী হতে পারেনি বলে আবার কি পুরোনো দলে ফিরতে ইচ্ছা করছে?’ রাজীবের পোস্টটি ট্যাগ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘৪২ হাজার ভোটে হারার পর মনে পড়ল? বিজেপির ৪২ জনের বেশি কর্মী মারা গেছে, তখন চুপ থাকা মানে শাসকদলকে সমর্থন করা।’

সূত্রের খবর, তাঁকে তৃণমূলে ফেরানোর জন্য রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বারবার ঘাসফুল শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এদিনের এই পোস্টের মধ্যে দিয়ে এবার রাজীব নিজেই সেই বার্তা দিতে চাইলেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বও রাজীব সহ দলত্যাগীদের একাংশের প্রতি নমনীয় মনোভাব রেখেছেন বলেই সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, দল ও মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিয়ে বিধানসভা ভবন থেকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি হাতে নিয়ে বেরোতে দেখা গিয়েছিল। সেসময় তিনি বলেছিলেন, যে দলই করুন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর আদর্শ। তাঁকে তিনি মায়ের আসনে বসিয়েছেন। এবার সেই রাজীবই ফের দলে ফিরতে চাইলে তৃণমূলসুপ্রিমো কি তাঁকে আবার কাছে টেনে নেবেন? উত্তর দেবে সময়ই। তবে দিন কয়েক আগেই সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামতে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রীও নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান রেখে দলত্যাগীদের ক্ষমা-ঘেন্না করে দলে ফিরিয়ে নেওয়া যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন। তবে তা দলীয় বার্তা নয়।

Related Articles