জনসংযোগ যাত্রার দশম দিনে মালদায় পৌঁছন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এদিনই তাঁর নবজোয়ার কর্মসূচির এই মঞ্চে যোগ দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলেন নবীন প্রবীণে ভারসাম্যের বার্তা। শোনালেন দলকে এই জায়গায় নিয়ে আসতে তাঁর লড়াই সংগ্রামের কথা।
শুরুতে সামান্য কয়েক কথা বলেই এদিন মমতার হাতেই সভা ছেড়ে দেন অভিষেক। এরপরেই নবীন-প্রবীণ-ছাত্র যৌবন, সকলকে নিয়ে চলার কথা বলেন মমতা। তিনি বলেন, “এখনকার প্রজন্মের এটা জানা দরকার। আপনাদের অনুরোধ করব, দলের ইতিহাস পড়ে দেখতে। না হলে তৃণমূল কংগ্রেস কী সংগ্রাম করেছে, জানবেন কী করে? তৃণমূল কংগ্রেস যে সংগ্রাম করেছে, পৃথিবীতে আর কাউকে তা করতে হয়েছে কিনা, সন্দেহ আছে আমার।”
মমতা বলেন “আদিবাসী মেয়েদের কাছে গল্প করছিলাম, তোমরা দেখছো আমি সুস্থ মানুষ। কিন্তু জানো কি, আমি একটা জীবন্ত লাশ? মেরে আমার মাথা ফাটিয়ে চৌচির করে দেওয়া হয়েছিল। লোহার রড দিয়ে মাথায় বাড়ি দেয়। আমি দেখি, গলগল করে রক্ত পড়ছে। তৎপর আরও একটা বাড়ি। মাথার দুপাশ বেয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। কীভাবে যেন দান হাত টা মাথায় চলে গিয়েছিল। তৃতীয় রডের বাড়িটা হাতের ওপর পড়ে। ডানহাতের আলনাটা দেখছেন, অর্ধেক নেই। থেঁতো করে দিয়েছিল। চেয়েছিল ব্রেন টা থেঁতো করে দিতে। রটে গিয়েছিল, আমি মারা গিয়েছি। সংসদ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অনেক অত্যাচার সহ্য করেছি…আমার শরীরে অনেক পার্টস নেই। হাতে, চোখে, মাথায়, পেটে অস্ত্রোপচার হয়েছে। পা থেঁতলে দিয়েছে।”
মমতা এ দিন বলে চলেন, “অনেক লড়াই করে, কষ্ট করে দল তৈরি করেছিলাম আমি। তার পর এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি। দিনের পর দিন অনশন করেছি। ২৬ দিন জল খাইনি। রাস্তায় পড়েছিলাম ২১ দিন। বাংলায় এমন জায়গা নেই, যেখানে আন্দোলন করিনি। এমন প্রচুর ঘটনা রয়েছে, যা আপনারা জানেন না। এখন যাঁরা এসেছেন, তাঁরা পুরোটা জানেন না হয়ত। ‘উপলব্ধি’ বইটা পড়লে, আমার জীবনের প্রথম অংশটা পাবেন।”