সীমান্ত পার করে গরু পাচার হত কীভাবে? বৃহস্পতিবার গরু পাচার মামলায় তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতারের পর সেই তথ্য পেতেই এবার মরিয়া সিবিআই। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই গরু পাচার মামলার মূল অভিযুক্ত এনামুল হককে জেরা করে সিবিআই জানতে পেরেছে, দেশজোড়া ছড়ানো গরু পাচারের জাল। সূত্রের খবর, উত্তর ও পশ্চিম ভারত অর্থাৎ পঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান থেকে গরু আসত বীরভূমে। মূলত যাদের সন্তান প্রজনন ক্ষমতা নেই, বয়স হয়ে যাওয়া সেই বলদই পাচারকারীদের প্রথম পছন্দ। ভিন রাজ্য থেকে তা আসত বীরভূমে, অনুব্রত মণ্ডলের ‘রাজত্ব’ ইলামবাজারে। আর এই ইলামবাজারেই বসে গরুর বিরাট হাট।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর, এনামুল ও অন্যান্যদের জেরা করে সিবিআই জানতে পেরেছে, ইলামবাজারের গরুর হাটের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ থাকত মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আব্দুল লতিফের হাতে। সেখান থেকে ট্রাকে করে গরু যেত বীরভূমের ফুটিসাঁকো বা বাদশাহি রোড ধরে মুর্শিদাবাদে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলিতে। গ্রামের বিভিন্ন খাটালগুলিতে সেই গরু রাখা হত। তারপর অপেক্ষা করা হত বিএসএফ এবং কাস্টমসের একাংশের সবুজ সঙ্কেতের। নির্দিষ্ট দিনে এক ঘণ্টা বা দু’ঘণ্টা সীমান্তের চোরা পথ কার্যত ‘ওপেন’ করে দেওয়া হত বিএসএফ ও কাস্টমসের একাংশ আধিকারিকের সঙ্গে যোগসাজসে।
সেখান থেকে গরু নিয়ে যেত স্থানীয় যুবকরা। বাংলাদেশ থেকেও আসত পাচারকারীরা।
স্থল সীমান্তর পাশাপাশি জল সীমান্ত ধরেও পারাপার করা হত গরু। পাচারে যাতে কোনওরকম বাধা না আসে, তার জন্য পাচারের রাস্তার সমস্ত থানার কর্তা থেকে স্থানীয় নেতা একটা মোটা অঙ্কের টাকা পেতেন। সিবিআই তদন্তে জানতে পেরেছে, এই টাকা জেলার প্রভাবশালী এক নেতার কাছেও যেত। সেই প্রভাবশালী নেতাই কি অনুব্রত মণ্ডল? হেফাজতে তাঁকে জেরা করে উত্তর খুঁজবে সিবিআই।