Sambad Samakal

প্রয়াত বিশ্বকোষ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক পার্থ সেনগুপ্ত

Jun 10, 2021 @ 7:19 pm
প্রয়াত বিশ্বকোষ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক পার্থ সেনগুপ্ত

চলে গেলেন বিশ্বকোষ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক পার্থ সেনগুপ্ত। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টেয় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
বিশিষ্ট বিশ্বকোষবিদ হওয়ার পাশাপাশি তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের নিরক্ষরতা দূরীকরণ আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। আগাগোড়া এক ধর্ম নিরপেক্ষ মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া বুদ্ধিজীবী মহলে।
১৯৪০ সালের ১ জুন কলকাতায় জন্মগ্রহণ। ছয়ের দশকের বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ছিলেন পার্থবাবু। প্রথমে স্কটিশচার্চ কলেজ ও পরে বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র ছিলেন। বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। পরবর্তীতে কালান্তর পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সম্পাদনা বিভাগে। ষাটের দশকের শেষের দিকে যুক্ত হন নিরক্ষরতা দূরীকরণ আন্দোলনের সঙ্গে। আরও কয়েকজনকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন নিরক্ষরতা দূরীকরণ সমিতি। এই প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন শুরু থেকেই। সাক্ষরতার আন্দোলনের একজন প্রথম সারির ব্যক্তিত্ব হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও সোভিয়েত ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সন্মেলনে অংশগ্রহণ করেন সাক্ষরতা আন্দোলনের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে। প্রতিষ্ঠা করেন সাক্ষরতা প্রকাশন, যা সত্তর-আশির দশকে বিভিন্ন গ্রন্থের সুলভ মূল্যে প্রকাশের বিষয়ে একটি উদাহরণ হয়ে ওঠে।
এরপর পার্থবাবু বিশ্বকোষ পরিষদ গঠনের কাজে সামিল হন বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদকে সঙ্গে নিয়ে। এই প্রতিষ্ঠানটি বাংলায় ২৪ খণ্ডের বিশ্বকোষ প্রকাশনার উদ্যোগ নেয়। প্রায় দশ হাজারের কাছাকাছি বিষয় নিয়ে তৈরি এই বিশ্বকোষ স্বাধীন ভারতের কোনও দেশীয় ভাষায় বিশ্বকোষ প্রকাশনার নিরিখেও একটি উদাহরণ হয়ে আছে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক সুকুমার মিত্র জানান, সাতের দশকে উন্মত্ত আক্রমণে কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগর মূর্তি ভাঙার পর পার্থ সেনগুপ্ত আরও কিছু বিশিষ্ট জনকে সঙ্গে নিয়ে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন। সেই উপলক্ষে প্রাপ্ত অর্থে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের মূর্তিটি পুনরায় নির্মাণের ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।

Related Articles