Sambad Samakal

শুভেন্দুর চেয়ে মুকুল ভালো, মমতার মন্তব্যে আলোড়ন

Mar 31, 2021 @ 12:01 pm
শুভেন্দুর চেয়ে মুকুল ভালো, মমতার মন্তব্যে আলোড়ন

শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই মুকুল রায়ের থেকে তৃণমূলের আক্রমণের ফোকাস সরে গিয়েছে প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীর দিকে। একসময় যাঁরা মুকুল রায়কে গদ্দার, মিরজাফর বলে কটাক্ষ করতেন, তাঁরাই এখন এই শব্দগুলো প্রয়োগ করছেন কাঁথির অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলের বিরুদ্ধে। বলা ভালো, ঘাসফুল শিবিরের নিশানায় এখন গোটা অধিকারী পরিবারই। কিন্তু এরই মধ্যে মুকুল রায় নিয়ে নতুন জল্পনা ছড়িয়ে দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। আক্রমণ করছেন না, অথচ বারবার মুকুল রায়ের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁর মুখে। কখনও শুভেন্দুকে বিঁধতে গিয়ে পুরোনো ঘটনার কথা তুলে সাক্ষী মানছেন মুকুল রায়কে। তো আবার কখনও শুভেন্দুর সঙ্গে মুকুলের তুলনা টেনে কৌশলে একসময়ের ছায়াসঙ্গীর প্রচ্ছন্ন প্রশংসা করছেন। মমতার এই অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। প্রশ্ন উঠছে, ভোট মরশুমে একসময়ের ছায়াসঙ্গী মুকুল রায়কে কি তাহলে বিশেষ কোনও বার্তা দিতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো?

দু-দিন আগেই নন্দীগ্রামের জনসভায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দেগে মুকুল রায়কে সাক্ষী মেনেছিলেন মমতা। শিশির অধিকারীকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করায় শুভেন্দু ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং বাবার শপথ গ্রহণে যাননি। এমনকী, তাঁকে মন্ত্রী না করে ‘বুড়া ভামকে’ কেন মন্ত্রী করা হল, তা নিয়েও প্রকাশ্যেই শুভেন্দু ক্ষোভ জানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রসঙ্গেই মমতা বলেছিলেন, তাঁর কথা বিশ্বাস না হলে, বিজেপির নেতা মুকুল রায়কে জিজ্ঞাসা করে দেখতে পারেন জনতা। মুকুল রায় পুরো ঘটনার সাক্ষী আছেন। আর মঙ্গলবার আরও একধাপ এগিয়ে নন্দীগ্রামের শেষ নির্বাচনী প্রচারের দিন টেঙ্গুয়া মোড় ক্রসিংয়ের জনসভা থেকে মমতা বলেন, ‘মুকুল শুভেন্দুর মতো এত খারাপ নয়। অন্তত এটা আমি বলব।’ শুধু তাই নয়, একসময় তাঁর দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ডের জন্য এদিন সমবেদনাও ঝড়ে পড়তে দেখা গেল তৃণমূল সুপ্রিমোর গলায়। বললেন, ‘মুকুল বেচারা থাকে কাঁচরাপাড়া। ব্যারাকপুর, জগদ্দল, ভাটপাড়া—এটা ওর নিজের জেলা। ওকে পাঠিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণনগরে!’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্যের পরই তীব্র আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রশ্ন উঠছে, মুকুল রায়কে তবে ঠিক কী বার্তা দিতে চাইছেন মমতা? মুকুল রায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া অবশ্য মেলেনি। তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, তাহলে কি একসময়ের ছায়াসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলাতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো? কিন্তু কোন সমীকরণে? দল ভাঙানোর খেলায় হাতযশ থাকা মুকুলকে নিয়ে কি তাহলে নতুন কোনও অঙ্ক কষতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী? উত্তর দেবে সময়ই।

Related Articles