কথিত আছে ওয়াজেদ আলি শাহের হাত ধরে শহর কলকাতার আকাশে উড়েছিল ঘুড়ি। কিন্তু ক্রমে তা অংশ হয়ে গিয়েছিল দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার আরাধনার সঙ্গে। পেটকাটি, চাঁদিয়াল, মোমবাতি, বজ্ঞা এই শহরেই সৃষ্টি হয়েছে নানা নামের বাহারের ঘুড়ি। কিন্তু সময়ের বালি ঘড়ির মতোই কলকাতা হারিয়েছে তার ঘুড়ির ঐতিহ্যকে। ঘুড়ি এখন বড় শিল্পের মতোই গুজরাট-মহারাষ্ট্রে ঠাঁই নিয়েছে।
উত্তরে শ্যামবাজার, ফরিয়াপুকুর আর দক্ষিণে এন্টালি, খিদিরপুর, একবালপুর এখনও ঘুড়ির বড় ঠেক। এলা সুতো, কাঁচ বাটা দিয়ে মাঞ্জা সুতোকে পিছনে ফেলে বাজার ছেয়েছে চীনের মাঞ্জা দেওয়া সুতো। প্রশাসনের কড়া নজর ফাঁকি দিয়েও মিলছে চীনা-মাঞ্জা সুতো। একবালপুরের তৌফিক কিন্তু বেজার মুখেই কচি-কাঁচাদের ভিড় সামলে বললেন, “চীনা সুতো বিক্রি করি না, কিন্তু ঘুড়ি নিয়ে সেই উন্মাদনা কোথায়?” আক্ষেপ ফড়িয়াপুকুরের সাগ্নিকের গলাতেও, “অনলাইন গেমে মজে আছে আজকের প্রজন্ম ঘুড়ি আর ওদের টানে না।”
খানিকটা সাগ্নিকের গলার স্বরই প্রতিফলিত হচ্ছে শহরের আকাশে। সেখানে ঘুড়ির ঐতিহ্য শহর ছেড়ে ভোকাট্টা হয়ে যাচ্ছে।