স্বপ্নরেখা সেনশর্মা
মোদি মন্ত্রিসভার মন্ত্রী থাকার সময়েই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দে্যাপাধ্যায়ের কাছ থেকে ঝালমুড়ি খেয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। সেই ঝালমুড়ি খাওয়া নিয়ে বাবুলকে যেমন ঘরে বাইরে বিস্তর টিপ্পনি সহ্য করতে হয়েছিল তেমনই কটাক্ষের শিকার হয়েছিল মমতাও। কিন্তু সেই বাবুলই যেই না মমতার নিজের দলে যোগ দিয়েছেন সেই মুড়ি খেতে নিষেধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কেন? রহস্য এখানেই।
অবশ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ার তিনদিনের মাথায় ভারী বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সোমবার দুপুরে নিজেই গাড়ি চালিয়ে নবান্নে আসেন বাবুল সুপ্রিয়। পাশে বসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মুখপাত্র ও রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ওব্রায়েন। অন্য কালো কাঁচঢাকা গাড়িতে নবান্নে আসেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী ঘরে বসে চারজনের মধ্যে আধঘণ্টা কথাবার্তা হয়। বিভিন্ন বিষয়ে দুজনের মধ্যে কথা হয়েছে বলে জানান সাংসদ। নবান্ন থেকে বেরিয়ে এ প্রসঙ্গে বাবুল বলেন, “আমি আজ খুশি। দিদির ভালবাসা, উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমি আপ্লুত। মন খুলে কাজ করতে পারব।” তবে তৃণমূলে তাঁর ভূমিকা কী হবে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক করে দেবেন বলে জানান জোড়াফুলে আসা বাবুল। বলিউডের এই প্রখ্যাত গায়কের কথায়, “দিদি, অভিষেক যা দায়িত্ব দেবেন তা পালন করব। মন খুলে গানও গাইতে পারব। দিদি যে গান গাইতে বলবেন, সেই গান গাইব।” শিবিব বদল করে জোড়াফুলে ঢুকে পড়া বাবুলের নতুন সংসারে মানিয়ে নেওয়া নিয়েও মুখ খুলেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বলেছেন, “আগেও নানা কর্মসূচিতে একাধিকবার দিদির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে প্রধানমন্ত্রীর একটা কর্মসূচিতে পাশেই বসেছিলাম। উনি মিউজিকের নানা বিষয় জানতে চাইছিলেন। আজও গান ছাড়াও নানা বিষয়ে কথা হয়েছে। অন্য জায়গা থেকে এখানে এসেছি। কিন্তু দিদি, অভিষেক আমাকে তৃণমূল পরিবারে আপন করে নিয়েছেন।”
নবান্নে বৈঠকের পর তৃণমূল শিবিরে তাঁর দায়িত্ব ও কার্যক্রম নিয়ে বাবুল বললেন , “দিদি বলেছেন মন খুলে কাজ করতে। সঙ্গে মন খুলে গান করতেও বলেছেন।” মমতা-বাবুল সাক্ষাতে স্বাভাবিকভাবে ঝালমুড়ি প্রসঙ্গ উঠেছে। বিষয়ট নিয়ে প্রশ্ন করতেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “এখন দেখা যাচ্ছে, মুড়ি খেলে সবাই মোটা হয়ে যাচ্ছে। ইউরিয়া মেশানো হচ্ছে মুড়িতে। তাই দিদি সেই সমস্ত মুড়ি খেতে বারণ করেছেন। উনিও খাচ্ছেন না। এবার আমার চালে ভাজা গ্রামীন খাটি মুড়ি খুঁজে বের করতে হবে।” আগামী বুধবার তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। স্পিকার তাঁকে সময় দিয়েছেন। ওইদিন তিনি আসানসোল সংসদীয় কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জেতা সাংসদ পদে ইস্তফা দেবেন। গত ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি দিয়ে তাঁর সিআরপিএফ ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নিতে অনুরোধ করেছিলেন বলেও দাবি করেন বলিউডি গায়ক ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।