ডাউন পেমেন্টের ৪৫ হাজার টাকার টাকার চেক বাউন্স করেছিল। সেই ‘অপরাধে’ যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল নৈহাটি বাজাজ গাড়ির শোরুম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। যদিও শোরুম কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশের উপস্থিতিতে শোরুমের শৌচালয়ের দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনায় মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শোরুমের মালিক সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে নৈহাটি থানার পুলিশ। খুনের অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
মৃত যুবকের নাম সাদ্দাম হোসেন। বাড়ি দত্তপুকুর থানার জাগুলিতে। জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসের গোড়ায় নৈহাটির বাজাজ শোরুম থেকে ফাইন্যান্সে একটি মোটর বাইক কেনেন সাদ্দাম। বাইকের দাম ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। সেই সময় ডাউন পেমেন্ট হিসাবে ৪৫ হাজার টাকার একটি চেক দেন ওই যুবক। কিন্তু চেকটি বাউন্স করে। গাড়ির শোরুম থেকে তাঁকে ফোন করে বারবার ডেকে পাঠানো হলেও তিনি আসেননি বলে অভিযোগ। এরপর অবশেষে ১৯ এপ্রিল, মঙ্গলবার সাদ্দাম নৈহাটির ওই শোরুমে হাজির হন। টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য কিছুদিন সময় চান তিনি। কিন্তু সাদ্দামের পরিবারের অভিযোগ, শোরুম কর্তৃপক্ষ তাঁকে আটকে রাখেন এবং বলেন, হয় বাড়ির লোককে টাকা নিয়ে আসতে হবে, নয়তো বাইকটি ফেরত দিতে হবে। এমনকী, ফোনে সাদ্দামের বাবাকে টাকা না নিয়ে এলে ছেলেকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। এরপরই সাদ্দামের পরিবারের তরফে স্থানীয় দত্তপুকুর থানায় যোগাযোগ করা হয়। সেখান থেকে তাঁদের নৈহাটি থানায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই মতো সাদ্দামের বাড়ির লোক বুধবার নৈহাটি থানার দ্বারস্থ হন। রাতভর ওই গাড়ির শোরুমে তাঁদের ছেলেকে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগে জানান তাঁরা। বুধবার দুপুরের পর অভিযোগের ভিত্তিতে নৈহাটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানতে পারেন, দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর শৌচালয়ে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন সাদ্দাম। অনেক ডাকাডাকিতেও দরজা খুলছেন না। নৈহাটি থানার পুলিশের সামনেই শৌচালয়ের দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় সাদ্দামের ঝুলন্ত মৃতদেহ। যদিও পরিবারের অভিযোগ, টাকা না পেয়ে তাঁদের ছেলেকে পিটিয়ে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে নৈহাটি থানার পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম রোহিত সিং, কৃষ্ণেন্দু ঘোষ ও অভিজিৎ মুখার্জি। এর মধ্যে রোহিত ওই শোরুমের মালিক। বাকি দু’জন কর্মচারী। ধৃতদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।