সুশ্বেতা ভট্টাচার্য
একসময় তিনিই ছিলেন “দিদি”র “চোখের মণি”, দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। কিন্তু রাজনৈতিক বিভেদে সেই তিনিই সরে যান কয়েক যোজন দূরে। পাঁচ বছর পর সেই দূরত্বকে দূরে সরিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে হাজির মুকুল রায়। ২০১৬ সালে শেষবার ফোঁটা নিতে এসেছিলেন তিনি।
বিজেপি ছেড়ে ফের ঘাসফুলে ফেরার পর মাঝে বেশ অসুস্থ ছিলেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সহ সভাপতি মুকুল রায়। তবে এখন শারীরিক ভাবে অনেকটাই সুস্থ তিনি। কয়েকদিন আগেই কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এসেছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তারপরেই রাজ্য রাজনীতিতে ফের গুরুত্ব বেড়ে মুকুলের। তাঁর কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে আগের মতোই নেতা মন্ত্রী বিধায়কদের লাইন পড়তে দেখা যায়। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই কালীঘাটে মমতার ৩০ বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে মুকুল। যা রাজ্য-রাজনীতিতে মুকুল রায়ের গুরুত্ব বৃদ্ধির জল্পনা উসকে দিল আরও একবার। কারণ, সাধারণত, এত দিনের রীতি বলছে, মমতার কালীঘাটের বাড়িতে ভাইফোঁটার উৎসব হয় তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের লোকজনদের নিয়েই। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, তাহলে কি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের গুরু দায়িত্ব পেতে চলেছেন তৃণমূলের একসময়ের “ভোট রাজনীতির চানক্য” মুকুল রায়? যুক্তি সাজাতে কেউ কেউ আবার মনে করাচ্ছেন ২০০৮ এ মূলত তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতায় ভর করে পঞ্চায়েত ভোটে পালাবদলের সূচনার ইতিহাসও।
মুখ্যমন্ত্রীর ভাইফোঁটায় এদিন মুকুল রায় ছাড়াও নজর কেড়েছে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি। এ নিয়ে শোভন তেমন কিছু না বললেও বৈশাখীর মতে, মাঝে অভিমানের মেঘ জমেছিল, আবার তা কেটে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২ বছর কোভিডের কারণে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান হয়নি। এবছর ফের ফিরে এল ভাইফোঁটার জমজমাট “পারিবারিক” অনুষ্ঠান।