হাসপাতালে ভর্তির প্রসেস সম্পন্ন করতে গিয়ে অনেকসময় চিকিৎসা শুরুর আগেই মৃত্যু হয় রোগীর। এবার এই বিষয়েই মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সাফ নির্দেশ, “ভরতির প্রসেসিং পরে, আগে চিকিৎসা করতে হবে।” বারবার হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতালের রেফার রোগ নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ভুয়সী প্রশংসা করেন সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের পরিষেবা প্রসঙ্গে। সিনিয়র চিকিৎসকদের রাতে হাসপাতালে থাকার জন্যও এদিন ফের আবেদন করেন মমতা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লি থেকে ফিরে সোজা কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্বাস্থ্যপ্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী। গিয়ে SSKM সেখান থেকেই হাসপাতালের রেফার করে দেওয়ার প্রবণতা এবং ভর্তির প্রক্রিয়ায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
নিয়মের বেড়াজালে অনেক সময়ই দুর্ঘটনায় আহতরা হাসপাতালে ভর্তির আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। আবার অনেক ক্ষেত্রে রেফার হয়ে আসা গর্ভবতী নারীও ভর্তির নিয়মের জটে চিকিৎসা শুরুর আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সেকথা উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। চিংড়িহাটার দুর্ঘটনা প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রসেস পরে হবে, আগে চিকিৎসা। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে এসব করা যায় না। এটা ইমারজেন্সি।” তিনি আরও বলেন, “প্রেগনেন্ট মহিলা রেফার হয়ে ৬ ঘণ্টার রাস্তা এলে তো মরেই যাবেন। তারপর থাকে প্রসেস।”
সরকারি ডাক্তারদের প্রশংসা করে মমতা বলেন, “ডাক্তারিকে অনেকেই ভাবেন এটা শোকেস। অনেকে আবার প্রাইভেট চেম্বার করেন। কারণ, সরকারি হাসপাতালে নির্দিষ্ট বেতনের মধ্যে কাজ করতে হয়। কিন্তু পার্থক্য এটাই যে, সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার আর নার্সরা সারারাত জেগে পরিষেবা দেন, এটা তাঁদের ক্রেডিট।” প্রত্যন্ত এলাকায় সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় ইনজেকশন দেওয়া, ড্রেসিং করার মতো খুঁটিনাটি কাজে নার্সদের ব্যবহার করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রয়োজনে আরও নার্স নিয়োগের কথাও বলেন তিনি। ডাক্তার ও নার্সদের প্রশংসা করে বলেন, “ওনারা কাজ করেছেন বলেই টিকাকরণে এগিয়ে বাংলা। মাতৃ মৃত্যুর হার কমেছে।”