সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তৃণমূলকে বিপাকে ফেলতেই “মিথ্যা” এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। স্টিং অপারেশনে তোলা ভিডিয়োতে এমনই দাবি করতে দেখা গেল সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের বিজেপি মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালকে। যা প্রকাশ্যে আসতেই ফের তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। বিজেপি মণ্ডল সভাপতির দাবি, “শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশেই ভুয়ো অভিযোগ সাজানো হয়েছে।” তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিওটি পোস্ট করেছেন। যদিও ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ সমকাল। তবে ভিডিয়োতে বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতির কথা স্পষ্ট শোনা গিয়েছে। শনিবার এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “সন্দেশখালির চাঞ্চল্যকর স্টিং দেখে বোঝা যায়, বিজেপি-র কত গভীর পর্যন্ত পচন ধরেছে। বাংলার উন্নত চিন্তা এবং সংস্কৃতির প্রতি ঘৃণা থেকে বাংলা বিরোধীরা আমাদের রাজ্যকে বদনাম করতে সবরকমের ষড়যন্ত্র করেছে। ভারতের এযাবৎকালীন ইতিহাসে দিল্লিতে এমন শাসকদল একটিও দেখা যায়নি, যারা একটা গোটা রাজ্য এবং রাজ্যবাসীকে এভাবে বদনাম করার চেষ্টা করেছে। দিল্লির এই ষড়যন্ত্রকারী সরকারের বিরুদ্ধে কীভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় বাংলা, কীভাবে তাদের বিসর্জন দেয়, ইতিহাস তার সাক্ষী থাকবে।”
নিন্দায় সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “সন্দেশখালির স্টিং ভিডিও দেখে আমি স্তম্ভিত, বাকরুদ্ধ। বাংলা বিরোধী বিজেপি নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে, বাংলাকে বদনাম এবং কালিমালিপ্ত করতে কী পরিকল্পনা করেছে, প্রত্যেক নাগরিকের দেখা উচিত। ক্ষমতার অপব্যবহার কোন পর্যায়ে যেতে পারে, এই জঘন্য আচরণই তার প্রমাণ। লজ্জাজনক।”
ভাইরাল ওই ভিডিও-য় বিজেপি নেতা গঙ্গাধরকে বলতে শোনা গিয়েছে, “ধর্ষণের ঘটনাই ঘটেনি। অভিযোগ করানো হয়েছে। গোটাটাই শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশ এবং পরিকল্পনামাফিক হয়েছে।” ক্যামেরার অন্য দিকে আরও কয়েক জনকে কথা বলতে শোনা যায়। ভিডিও-য় যে কথোপকথন শোনা যায়, তা হল, “এই আন্দোলনকে ধরে রাখার ক্ষমতা কারও নেই। শুভেন্দুদা তাঁর লোকজনকে দিয়ে টাকা, মোবাইল পাঠিয়ে সাপোর্ট দিচ্ছেন…।”
ভিডিও-য় একাধিক ব্যক্তির গলা শোনা যায়। তাঁদের বক্তব্য ছিল, “আমাদের বাড়ির বউদের দিয়ে এটা করানো যেত! আমরাই পারতাম না। দাদা সেখানে বাইরের লোক হয়ে তাদের দিয়ে করিয়েছে। তৃণমূলের লোকদের দিয়েই করিয়েছে…শুভেন্দুদা বলেছিলেন, এটা করতে না পারলে, তাবড় লোকগুলোকে গ্রেফতার না করালে, ওখানে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। শুভেন্দুদাই পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করতেন। পীযূস এসেছিলেন…।”