সুস্থ অঙ্গ কেটে নিয়ে তাঁকে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছেন চিকিৎসক! সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক এমনই অভিযোগে ফের শোরগোল ফেলেছেন লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তাঁর অভিযোগ, ওই শল্যচিকিৎসক কার্যত জোর করে তাঁর ‘হিপ রিপ্লেসমেন্ট’ অস্ত্রোপচার করেছেন। অস্ত্রোপচারের পর থেকেই তিনি আর চলতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার ফেসবুকে করা এই পোস্টে তসলিমা স্পষ্টই জানিয়েছেন, চিকিৎসা বিভ্রাটের কারণে পঙ্গু হতে চলেছেন তিনি।
চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে ফেসবুকে তসলিমা লেখেন, ‘‘মানুষকে বিশ্বাস করার ফল কী হতে পারে, যারা বন্ধু নয়, তাদের বন্ধু ভাবার ফল কী হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। নিজের জীবন দিয়ে টের পেলাম। হাসপাতালের এক ডাক্তারকে বিশ্বাস করেছিলাম। ভেবেছিলাম তিনি বোধ হয় বন্ধু, তাঁকে জানিয়েছিলাম যে পড়ে গিয়েছিলাম ঘরে, এক্সরে করতে হবে। সেই বন্ধু আমাকে পাঠিয়ে দিলেন তাঁর হাসপাতালের অর্থপেডিক ডাক্তারের কাছে যিনি হিপ রিপ্লেসমেন্টের এক্সপার্ট। সেই এক্সপার্ট শুরু থেকে আমার ফিমারের সামান্য ফ্র্যাকচারের ফিক্সেশান ট্রিটমেন্ট না করে আমার হিপ রিপ্লেসমেন্ট করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। আমি বাধা দিয়েছি। তিনি বার বার এসেছেন আমাকে কনভিন্স করতে। তিন-চার জন ডাক্তারকে পাঠিয়েছেন কনভিন্স করতে। আমাকে কোনও সময় দেওয়া হয়নি নিজে চিন্তা করতে, বা শুভাকাঙ্ক্ষীদের কারও সঙ্গে কথা বলতে।’’
চিকিৎসা পদ্ধতির গাফিলতির অভিযোগ এনে লেখিকা জানান, ‘‘যে সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম, সেই সমস্যার ট্রিটমেন্ট না করে ক্রমাগত মিথ্যে কথা বলে আমার শরীরের সুস্থ অঙ্গ প্রত্যঙ্গ কেটে নেওয়া হয়েছে। আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না বড় ডাক্তাররা এমন ভয়াবহ ক্রাইম করতে পারেন। আর আমারও বুদ্ধিসুদ্ধি কোথায় গিয়েছিল যে, এমন ক্রাইমের শিকার হতে নিজেকে দিলাম!’’ এমনকী যে যে কারণে হিপ রিপ্লেসমেন্ট করতে হয়, সেগুলির উল্লেখ করার পাশাপাশি সেই সমস্যাগুলোর কোনোটাই তাঁর ছিল না বলেও পোস্টে স্পষ্ট জানিয়েছেন তসলিমা।
স্বাভাবিক ভাবেই তসলিমার এই পোস্ট ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। তাঁর অনুগামীরা একদিকে যেমন লেখিকার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন, তেমনই অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে লেখিকা কী ব্যবস্থা নেন, সে বিষয়েও নজর রাখছেন। তবে তসলিমা কিন্তু অভিযুক্ত চিকিৎসক বা চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নাম এখনও সামনে আনেননি।