সমলিঙ্গ সম্পর্কে মান্যতা দিলেও সমলিঙ্গ বিভাগে আইনি স্বীকৃতি দিল না দেশের শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার এ বিষয়ে কেন্দ্রের কমিটিকে পদক্ষেপ করতে বলেছে শীর্ষ আদালতের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সমলিঙ্গ সম্পর্কের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য কেন্দ্র যে কমিটি গড়েছে, এ বিষয়ে সেই কমিটির অগ্রসর হওয়া উচিত বলে মত প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের।
প্রধান বিচারপতির পর্যক্লবেক্ষণ, ‘‘বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি কোনও অনড়, অটল বিষয় নয়। বিবাহে বিবর্তন আসে।’’ তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত স্তরে যে কোনও কাজকে আইনের ঊর্ধ্বে রাখা উচিত নয়। বিবাহ বর্তমানে যে স্বীকৃতি পেয়েছে, আইন না থাকলে তা সম্ভব হত না।’’ তাঁর মতে, সমকাম শহুরে বিষয় নয়।
সমলিঙ্গে বিবাহ নিয়ে রায় ঘোষণা করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, সমকামী কিংবা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের যে কোনও মানুষকেই হেনস্থা বন্ধ করতে হবে বলে এদিন সাফ জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তিনি স্পষ্ট জানান, এই সম্প্রদায়ের কাউকে তাঁদের যৌন পরিচয় জানার জন্য থানায় তলব করা যাবে না। তাঁরা বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এলে তাঁদের সেখানে জোর করে ফেরানো যাবে না। এই সম্প্রদায়ের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ করার আগে পুলিশকে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘জীবনসঙ্গী নির্বাচন করা প্রত্যেকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’’
টানা ১০ দিনর শুনানি পর্বের শেষে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ গত ১১ মে রায় সংরক্ষিত রেখেছিল। মঙ্গলবার শেষ হয়েছে সেই সময়সীমা।সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্য সদস্যেরা হলেন, বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কউল, বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্ট, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি এস নরসিংহ। এদিন রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি কউল বলেন, ‘‘বিশেষ বিবাহ আইনে সমলিঙ্গ মিলনকে অন্তর্ভুক্ত করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ওই আইন পরিবর্তন করতে হলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।’’ তবে তাঁর পর্যবেক্ষণ, আইনটি শুধুমাত্র বিসমকামী যুগলদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছিল, এই মতও তিনি মানতে চাননি। সমকামী মিলন এবং বিসমকামী মিলনকে একই মুদ্রার দুই পিঠ হিসাবে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি কউল।