রাজনীতিতে বয়সসীমা নিয়ে ফের প্রকাশ্যে মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলা ভালো, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্টো সুরেই বললেন। তাঁর সাফ কথা, ‘‘আমি মনে করি, সব পেশার মতো রাজনীতিতেও একটা বয়ঃসীমা থাকা উচিত।’’
সম্প্রতি নেতাজি ইনডোরের দলীয় সমাবেশে সাংসদ সৌগত রায়ের নাম উল্লেখ করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছিলেন, ‘‘বয়স আবার কী! মনের বয়সটাই আসল কথা!’’ কিন্তু এরপরেই নেত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে সুর ছড়িয়েছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। পরবর্তীতে কুণাল-সৌগতর বাকযুদ্ধের সাক্ষী থেকেছে বঙ্গ রাজনীতি। এবার সেই বিষয়েই আরও একবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন দলের তরুণ-তুর্কি “সেনাপতি” অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েই সাংগঠনিক কাঠামোয় সংস্কারে মন দেন অভিষেক। এক ব্যক্তি, এক পদ নীতির কথা বলেন। রাজনীতিতে অবসরের বয়সের কথা বলার পাশাপাশি তিনি তরুণ প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব বণ্টনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও তুলে ধরেন। যদিও ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের এই মত ঘিরে দলে মতভেদ আছে। স্বয়ং নেত্রীই বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই মত সমর্থন করেন না। বরং “দুর্দিনের সাথী”দের তিনি যে হারাতে চান না, সেকথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন বারবার। নেতাজি ইনডোরের সমাবেশেও নেত্রীর বক্তব্যে এই সুরেরই অনুরণন ছিল বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
সোমবার উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে এবিষয়ে মুখ খোলেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখলে পতন অবশ্যম্ভাবী। তা সে কংগ্রেস হোক, সিপিএম হোক বা তৃণমূল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, সমস্ত পেশাতেই অবসরের বয়ঃসীমা আছে। বয়সের ঊর্ধ্বসীমাও আছে। শুধু রাজনীতি কেন, ক্রিকেট, ফুটবল— সবেতেই অবসরের বয়স আছে।’’ পাশাপাশিই অভিষেক এ-ও বলেছেন যে, দলের প্রবীণদের অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর মতে, ‘‘নবীন-প্রবীণ সবাইকে নিয়েই দল চলবে। প্রবীণদের অভিজ্ঞতা দলের প্রয়োজন। তবে কাজের জন্য দরকার তরুণদের। যতই হোক, বয়স বাড়লে কাজের ক্ষমতা কিছুটা হলেও কমে।’’ অভিষেক মনে করেন, ‘‘অনেকেই যোগ্য লোকদের সামনে আসতে দেন না। সেটা ঠিক নয়।’’ পাশাপাশি বলেন, ‘‘যদি কেউ মনে করেন, যাদের বয়স ২০, ২৫ বা ৩০— তারাই শুধু তৃণমূল করবে, তা হলে মনে রাখতে হবে, বিষয়টা সেটাও নয়।’’