শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা পাঠিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। নিজের এক্স হ্যান্ডেলে ঘোষণা করেছিলেন পদ ছাড়ার কথা। এমনকী এক্স হ্যান্ডেল থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন দলীয় পদের “বায়ো”। শনিবার মুখপাত্র পদে কুণালের ইস্তফা গ্রহণ করলেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে তাঁর ইস্তফা গৃহীত হয়নি। যদিও ঘনিষ্ঠ মহলে বারবার কুণাল জানিয়েছেন, সম্পাদক পদেও আর থাকতে চান না তিনি।
সূত্রের খবর, কালীঘাট ও ক্যামাক স্ট্রিট থেকে যৌথ আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আর এতেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কুণালের লাগাতার আক্রমণাত্মক বক্তব্যের দায় যে তৃণমূল কংগ্রেস নেবে না, সেই বার্তা দিতেই মুখপাত্র পদে তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দু’দিন ধরে যেভাবে সুর ছড়িয়েছেন কুণাল, যেভাবে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন, কয়লা কেলেঙ্কারির সঙ্গে যোগের কথা বলেছেন, লোকসভা ভোটের মুখে তা আদতে তৃণমূলের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন দলের প্রথম সারির নেতাদের একটি বড় অংশ। গোটা ঘটনায ঘনিষ্ট মহলে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তাঁদের অনেকেই। তাছাড়া তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, কুণালের এই বিস্ফোরক আক্রমণের প্রবণতা অন্যদের মধ্যে সংক্রমিত হলে ভোটের মুখে তা মারাত্মক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে দলকে। তাঁদের বক্তব্য, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি-যোগের অভিযোগ এনেছেন কুণাল। কিন্তু আদতে নিজে সুদীপের গ্রেফতারির দাবি তুলে সমাজ মাধ্যমে যে পোস্ট করেছেন, তাতে ইডি ও সিবিআই ডিরেক্টরদের ট্যাগ করে বিজেপিকেই ভোটের মুখে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছেন। তাই তাঁর প্রতি কড়া অবস্থান স্পষ্ট করতেই বিনা বিতর্কে মুখপাত্র পদে কুণালের ইস্তফা গ্রহণ করে নিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। বুঝিয়ে দিয়েছেন, কুণাল ঘোষের বক্তব্য নিতান্তই তাঁর, এর সঙ্গে দলের মতামতের কোনও সম্পর্ক নেই।