আচমকা বিজেপির রাজ্য সভাপতি বদল। বাবুল সুপ্রিয়র দলত্যাগের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরানো হল দিলীপ ঘোষকে। তাঁর জায়গায় দলের নতুন রাজ্য সভাপতি হচ্ছেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ ড. সুকান্ত মজুমদার। তরুণ তুর্কি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে জুটি হিসাবে সুকান্তে আস্থা রাখলেন অমিত শা-নাড্ডারা।
এমনিতেই বিধানসভা ভোটে দলের ভরাডুবির পরই বিজেপি রাজ্য সভাপতির ব্যর্থতা ও বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত কুকথা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। তার ওপর বাবুল সুপ্রিয়র দলত্যাগ বড় প্রভাব ফেলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ওপর। আসানসোলের সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে বারবার দিলীপ ঘোষের বিরোধের খবর সামনে এসেছে। সূত্রের খবর, বাবুল সুপ্রিয় দল ছাড়ার জন্য দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর এই বিরোধকেই দায়ী করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই কারণেই রাতারাতি দিলীপ ঘোষকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে দলের সদ্যপ্রাক্তন রাজ্য সভাপতিকে সর্বভারতীয় সহ সভাপতির পদ দেওয়া হল বলে জানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। অবশ্য দিলীপ ঘনিষ্ঠরা বলছেন, সহসভাপতি পদ স্রেফ একটা লজেন্স দিয়ে সান্ত্বনা পুরস্কার।
বিধানসভা ভোট পরবর্তী সময় থেকেই দেখা গেছে, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে একদিকে যেমন দিলীপের গুরুত্ব কমেছে, তেমনই গুরুত্ব বেড়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। সাংগঠনিক ক্ষেত্র থেকে ভোট পরবর্তী হিংসা, কিংবা উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাই, রাজ্যের বিষয়ে যে কোনও সিদ্ধান্ত বা আলোচনায় শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে একদিকে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ, অন্যদিকে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবার শুভেন্দুর উপযুক্ত জুড়ি হিসাবেই রাজ্য সভাপতির দায়িত্বে সুকান্ত মজুমদারকে আনলেন শাহ- নাড্ডারা। দুজনেই দিলীপ ঘোষের থেকে বয়সে অনেকটাই নবীন। তাই অপেক্ষাকৃত প্রবীণ ও বিতর্কিত দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে এই দুই তরুণ তুর্কির হাতেই গেরুয়া শিবির রাজ্যের সংগঠন মজবুত করার দায়িত্ব দিল। এদিন শুভেন্দু আসানসোল গিয়েছিলেন সংগঠনের কাজে। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তাঁর গাড়ি থেকেই নামতে দেখা গিয়েছে প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে।
যদিও সোমবার রাতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বদলের ঘোষণার পরেই দলের নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে স্বাগত জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “নতুন রাজ্য সভাপতিকে অভিনন্দন। পশ্চিমবঙ্গে পার্টি নতুন ভূমিকায় এসেছে। এখানেও তাই পরিবর্তন দরকার।” অন্যদিকে, নতুন দায়িত্ব পেয়ে সুকান্ত বলেন, “দিলীপ দা বাংলায় বিজেপির ভিত তৈরি করে দিয়ে গেছেন। দিলীপ দার পরামর্শ কাজে লাগাবো। বঙ্গ বিজেপিকে আরও শক্তিশালী করাই লক্ষ্য।”