নিম্ন চাপ ও মৌসুমী অক্ষরেখার জোড়া ফলায় বিপর্যস্ত কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলো। তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে জমা জলে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে তিলোত্তমার বিভিন্ন এলাকায়। কলকাতা হয়েছে যথার্থই কল্লোলিনী। চিনার পার্ক থেকে বিমানবন্দর, শ্যামবাজার থেকে সল্টলেক, টালা থেকে টালিগঞ্জ, জল থৈ থৈ রাস্তায় কোনও ক্রমে চলছে বাস। বিভিন্ন রুটে বন্ধ হয়েছে অটো পরিষেবা। অন্য দিকে, সমুদ্র লাগিয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনা সহ একাধিক জেলায় শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। বৃষ্টির জলে ডুবেছে ঘর বাড়ি। তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। জলের তলায় উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি, সোদপুর, ব্যারাকপুর ডঃ বিস্তীর্ণ এলাকা। জলমগ্ন ব হাওড়া ও হুগলির বহু এলাকাও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খুলল নবান্ন। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ৫৭৭টি ত্রাণ শিবির খুলে কমপক্ষে ৮০ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ১ লক্ষ ৪১ হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে নিরাপদ স্থানে। জলমগ্ন উত্তর কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা । সিঁথির মোড় থেকে ডানলপগামী বিটি রোডের বড় অংশ এখনও জলমগ্ন। জল জমে রয়েছে টালা, দমদম, বরানগর , চিত্পুর, বাগবাজার, শ্যামবাজার, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের একাংশে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর সোনারপুর পুরসভার প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডই এখনও কমবেশি জলমগ্ন। একাধিক রাস্তায় প্রায় হাঁটু সমান জল। অলি গলিতে জল আরও বেশি। অনেক বাড়িতে জল ঢুকেছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে অনেককে বাডি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে।পুরসভা জানিয়েছে, পাম্প চালিয়ে জল সরানোর কাজ চলছে। পঞ্চায়েত এলাকাতেও নীচু জমি জলের তলায়। ক্যানিংয়ে প্রবল বৃষ্টির কারমে মাতলা ১ ও মাতলা ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ১০টি গ্রাম জলমগ্ন। পুকুর, রাস্তা মিশে গেছে। কোথাও কোথাও জল ঢুকেছে বাড়িতে। ঘরে জল ঢুকে যাওয়ায় সাপ খোপ, পোকামাকড়ের উপদ্রবের আতঙ্কে ভুগছেন বাসিন্দারা। নবান্ন সূত্রে খবর, হয় ১৪ থেকে থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জলে ডুবে, দেওয়াল ধসে ও তড়িদাহত হয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। এছাড়াও একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বজ্রপাতের জেরে হাওড়া, নদিয়া থেকেও একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর মিলেছে।