দ্বিতীয় স্বামীর সংসারে সুখের পথে কাঁটা হয়ে উঠেছিল গর্ভজাত সন্তান। দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাই সাড়ে তিন বছরের শিশুকন্যাকে সরিয়ে সুচ ফুটিয়ে হত্যা করেছিল মা নিজে। নৃশংস এই ঘটনায় মা মঙ্গলা গোস্বামী ও তার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী সনাতন গোস্বামী ওরফে ঠাকুরকে গত শুক্রবারই দোষী সাব্যস্ত করেছিল পুরুলিয়া জেলা আদালত। মঙ্গলবার পুরুলিয়া জেলা আদালতের দ্বিতীয় কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রমেশকুমার প্রধান ওই দম্পতিকে ফাঁসির সাজা শোনান।
মামলার সরকারি আইনজীবী আনোয়ার আলি আনসারি জানান, দোষী সাব্যস্ত হওয়া সনাতন গোস্বামী ওরফে ঠাকুর ও মঙ্গলা গোস্বামীর বাড়ি পুরুলিয়া মফস্বল থানার নদিয়াড়াতে। ওই শিশু কন্যাকে ঠান্ডা মাথায় খুন করতে শরীরে সাত-সাতটি সূচ ঢুকিয়ে দিয়েছিল দম্পতি। পায়ুদ্বারে একটি ও পেটের দু’পাশে ছ’টি সূচ ঢুকিয়ে দিয়েছিল তারা। ২০১৭ সালের জুলাই মাসের এই ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশে। অসুস্থ ওই শিশুকে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি হয়। তারপর পুরুলিয়া চাইল্ড লাইনের তৎকালীন কো–অর্ডিনেটর দীপঙ্কর সরকার ওই বছরের ১৪ জুলাই পুরুলিয়া মফস্বল থানায় অভিযোগ করেন। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই শিশু কন্যার শরীর থেকে সাতটি সূচ বের হওয়ার পরেও তাকে বাঁচানো যায়নি। ২২ জুলাই রাতে এসএসকেএমে তার মৃত্যু হয়। তারপরেই তার মা মঙ্গলা ও সনাতন গোস্বামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুরুলিয়া আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলায় মোট ৪৪ জন সাক্ষী দেন। অভিযোগের ৫৮ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেওয়ার পর ওই বছরের ২৪ অক্টোবর মামলা শুরু হয়। সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, “স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। বিরলতম ঘটনা হিসেবে ব্যাখ্যা করে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হল দোষীদের।” এই রায় এবার কলকাতা হাই কোর্টে পাঠাবেন পুরুলিয়া আদালতের বিচারক।