সুশ্বেতা ভট্টাচার্য
“আপনারা যদি আমাকে ভোট না দেন, তাহলে আমাদেরই সরকার থাকলেও আমি আর মুখ্যমন্ত্রী থেকে আপনাদের জন্য কাজ করতে পারব না, অন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তাই তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ফিরে আসার জন্য আমার কাছে আপনাদের প্রত্যেকটা ভোট লো খুব জরুরি।” বুধবার একবালপুর ও চেতলার জোড়া জনসভায় এভাবেই বললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা ভবানীপুর উপনির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চেতলায় ফিরহাদ হাকিমের দুর্গাপুজোর ভূয়সী প্রশংসা করে কোলাহল, আলিপুর সার্বজনীনের পুজোর কথাও বলেন নেত্রী।
রাজনীতির কচকচানি নয়, চেতলা অহিন্দ্র মঞ্চের পাশে নির্বাচনী জনসভায় তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য এদিন ছিল আবেগতাড়িত। ভবানীপুর তাঁর নিজের মাটি। বারবার তিনি এই ভবানীপুর থেকে জিতেছেন। সেকথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, “এই ভবানীপুরের মানুষ আমায় কোনওদিন ফেরায়নি। আমি আপনাদের ঘরের মেয়ে। আপনাদের চোখের সামনেই ছোট থেকে বেড়ে ওঠা, বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হল ধরার পাশাপাশি আমার রাজনৈতিক জীবন, সবটাই আপনাদের কাছে পরিষ্কার। আমার মা চেয়েছিলেন, আমি যেন এই কেন্দ্রে প্রার্থী হই, যাতে তিনি আমায় ভোট দিতে পারেন। আমার মা আমায় ভোট দিয়েছেন। আজ মা নেই। আপনারা আছেন, আমার নিজের লোক। দিদি তো এমনিই জিতে যাবে, ভেবে বাড়িতে বসে থাকবেন না। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী ৩০ সেপ্টেম্বর ভোটের দিন সরকারি বেসরকারি সব সংস্থায় ছুটি, তাই ভোটের দিন বাড়িতে বসে না থেকে নিজের ভোট নিজে দিন। আপনাদের প্রতিটা ভোটই খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
আবেগমথিত হয়ে ভবানীপুরের ‘ঘরের মেয়ে’ বলেন, “আপনারা সবাই আমার আপনজন। এখানেই ছেলেবেলায় পাড়ায় ডাংগুলি খেলেছি, আদিগঙ্গায় সাঁতার শিখেছি। দল বেঁধে ভাই বোনেরা সাঁতার কাটতে যেতাম। এখানেই রাজনীতির জীবন শুরু, এটাই আমার কর্মভূমি, তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মভূমি।”
ভবানীপুর নিয়ে নিজের কর্মকান্ড বলতে গিয়ে মমতা বলেন, “আপনাদের কাছেই সব শিখেছি, আপনাদের সাথেই থাকবো। সারাক্ষন আপনাদের ব্যাপারেই চিন্তা করি। মুখ্যমন্ত্রী হয়ে দায়িত্ব বেড়েছে। কাজের চাপ বেড়েছে। কিন্তু তাতে অসুবিধা নেই। আমি কাজ করতে ভালবাসি। আবার কাজ করার সুযোগ চাইছি। আমি কথা দিলে কথা রাখি। আমাকে জেতান, তবেই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে পারব।”
চেতলার সভায় নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “বিজেপি কী চক্রান্ত করেছিল, শুনলে ভয় লাগবে। দেড় মাসেরও বেশি আমাকে হুইলচেয়ারে ঘুরতে হয়েছে। পায়ে চোট পেয়েছিলাম, ভাগ্য ভালো মারা যাইনি।”