সোমনাথ লাহা
বাংলা ছবিতে আবার ভৌতিক কাহিনির প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে। সেই কাহিনির মধ্যে যদি থাকে থ্রিলারের ছোঁয়া, তাহলে তো কথাই নেই। বিষয়ভাবনাতেও তাই নতুনত্বের স্বাদ আনছেন পরিচালকরা। গল্প অনুযায়ী তৈরি হচ্ছে নতুন জুটি। তালিকায় নয়া সংযোজন নবাগত পরিচালক অয়ন দে’র প্রথম ছবি ‘ভয় পেয়ো না’।
শুভজিৎ মণ্ডল নিবেদিত এবং বিগ স্ক্রিন প্রোডাকশন প্রযোজিত এই হরর-থ্রিলার ছবির হাত ধরেই প্রথমবার বড়পর্দায় জুটি বাঁধছেন শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় এবং ওম সাহানি। ছবিতে স্বামী-স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে তাঁদের। ছবির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে ডা. আকাশ (ওম) ও তাঁর স্ত্রী অনন্যা (শ্রাবন্তী) -কে কেন্দ্র করে। তাঁদের বিয়ের পর আকাশের মা বহ্নিশিখার সঙ্গে চরম তিক্ততার সম্পর্ক সৃষ্টি হয় অনন্যার। ভয় দেখিয়ে, চক্রান্ত করে বাড়ি থেকে অনন্যাকে তাড়ানোর চক্রান্ত করা হয়। আর তার রেশ ধরেই উন্মোচিত হয় আরও এক রহস্যের। সব ধারণা, হিসেব-নিকেশ একেবারে ওলট-পালট হয়ে যায়। অনন্যার চরিত্রটি আপাতভাবে সাধারণ মনে হলেও শেষে রয়েছে চমক। ছবিতে শ্রাবন্তী-ওম ছাড়াও রয়েছেন দর্শনা বণিক। ছবিতে একটি আইটেম গানে পারফর্ম করতে দেখা যাবে দর্শনাকে। এবার প্রকাশ্যে এল ছবির ফার্স্ট লুক পোস্টার ও টিজার। পোস্টারটি রীতিমতো রহস্যময় ও ভৌতিক আবহে মাখা। পোস্টারটিতে দেখা যাচ্ছে চেক
শার্ট পরিহিত হয়ে ও গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে চেয়ারে বসে রয়েছেন ওম। চোখে রিমলেস চশমা। চোখ-মুখ জুড়ে বিস্ময়ের ভাব। ওমের পিছনে তাঁর গলা জড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শ্রাবন্তী। খোলামেলা চুল। তাঁর কপালে, চোখের নিচে, ঠোঁটের নিচে আঁচড়ের দাগ। সেখান থেকে রক্ত ঝরছে। এমনকি তাঁর গালেও আঁচড়ের চিহ্ন। এখানেই শেষ নয়। শ্রাবন্তীর এককাঁধে ও অপর হাতে বেষ্টন করে রয়েছে এক অশরীরীর হাত। কোথাও গিয়ে শ্রাবন্তীর চোখ-মুখ জুড়েও যেন সেই হিমশীতল আবহের বিস্ময় রূপ। ছবির টিজারেও রহস্যের ঘনঘটা।অনন্যারূপী শ্রাবন্তী বিয়ে করে বউ হয়ে আসে আকাশের (ওম)। কিন্তু তারপর কেউ যেন মেরে ফেলতে চায় অনন্যাকে! বিছানায় শোয়া অবস্থা থেকে আচমকাই ভয়ে চিৎকার করে উঠে বসে সে। দেখা যায় অন্তরশুদ্ধি মানসিক হাসপাতালের টিমটিমে আলোর আবহে অনন্যার মনের মানসিক টানাপোড়েন। সবমিলিয়ে টানটান ভয় ও থ্রিলের আবহ মাখা ছবির টিজার। ছবির সিনেমাটোগ্রাফার শুভদীপ বাগ। ছবির সংগীত পরিচালনা এবং আবহসংগীতের দায়িত্বে সামলেছেন ডাব্বু। প্লেব্যাকে রয়েছেন অনুপম রায়, অন্তরা মিত্র ও রাজ বর্মণের মতো শিল্পীরা।
শ্রাবন্তীর কথায়, “খুব সাধারণ চরিত্র মনে হলেও শেষে গিয়ে একটা দারুণ চমক আছে। গল্পটা প্রথম বার শুনে আমিও চমকে গিয়েছিলাম।” ওমের সঙ্গে কাজ করা বিষয়ে শ্রাবন্তীর জবাব, “ওম খুব দক্ষ অভিনেতা এবং আমার খুব ভাল বন্ধু । আগেও কাজ করেছি ওঁর সঙ্গে । তবে এবার জুটি বেঁধে কাজ করছি। ওমের স্ত্রী মিমিও আমার খুব ভালো বন্ধু।”
ওম জানান, “শ্রাবন্তীর সঙ্গে এর আগেও কাজ করেছি । তবে, জুটি বেঁধে নয় । অনেকদিনের ইচ্ছে ওঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করব। এবার সেই ইচ্ছে সফল হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ইতিপূর্বে ‘হুল্লোড়’ ছবিতে ওম ও শ্রাবন্তী একসঙ্গে কাজ করলেও জুটি বাঁধেননি। ছবিতে ওম-শ্রাবন্তী জুটিকে নেওয়ার বিষয়ে পরিচালক জানান, “আমরা যখন এই ছবির গল্প লিখি, তখন থেকেই অন্যন্যা চরিত্রের জন্য শ্রাবন্তীদিকেই ভেবেছিলাম।কারণ, বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে উনি অভিনয় করলেও, হরর ছবিতে কাজ করেননি।আর ওম আমার পূর্ব পরিচিত। ওর ছবির বিষয়টা খুব পছন্দ ছিল। এর আগে ওঁরা দু’জনে এক ছবিতে কাজ করলেও, একে অপরের বিপরীতে করেননি। আমি প্রথম ছবিতে একটু অন্যরকম কাস্টিং করতে চাইছিলাম। সব মিলিয়ে মনে হল ডা. আকাশ চট্টোপাধ্যায় আর তার স্ত্রী অন্যন্যার ভূমিকায় ওঁদের কাস্ট করি।” সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৭মে মুক্তি পাবে ‘ভয় পেয়ো না’।