নিয়ম বহির্ভূত ভাবে চড়া দামে ওষুধ কিনে দিনের পর দিন নষ্ট করা হয়েছে রাজ্যের টাকা। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই কার্যকলাপে রাজ্যের কোষাগার থেকে কার্যত প্রায় ৫০ কোটি টাকা লুঠ হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় কাঠগড়ায় স্বাস্থ্যভবন।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়াবিটিসের একটু ওষুধের জেনেরিক প্রোডাক্ট না থাকায় শুরুতে ট্যাবলেট প্রতি ১২ টাকা ৪৩ পয়সা দরে সেই ওষুধটি কিনছিল সেন্ট্রাল মেডিসিন স্টোর (সিএমএস)। কিন্তু পরবর্তী কালে সংশ্লিষ্ট ওষুধটির জেনেরিক প্রোডাক্ট বাজারে আসে, যার দাম ট্যাবলেট প্রতি মাত্র ২ টাকা। হিসেব মতো ২০১৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর চড়া দামের ওই ওষুধটির প্রোপাইটরি পিরিয়ড শেষ হয়। এবং নিয়ম মতো এরপর থেকেই কম দামে জেনেরিক ওষুধ কেনার কথা স্বাস্থ্য ভবনের। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১২ টাকা ৪৩ পয়সা দরেই ডায়াবিটিসের ওই ওষুধটি কিনেছে সেন্ট্রাল মেডিসিন স্টোর।
স্বাস্থ্য ভবনের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ২৮ কোটি ৬১ লক্ষ ৮০ হাজার ৫৭৩ টাকার ওষুধ কেনা হয়। অথচ জেনেরিক ওষুধ কিনলে খরচ হত মাত্র ৩৮ লক্ষ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ওষুধ কেনা হয় ২০ কোটি ৭৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩৪৯ টাকার। জেনেরিক ওষুধে খরচ হত ৩ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। কিন্তু এক্ষেত্রে সব মিলিয়ে মোট খরচ হয়েছে ৪৯ কোটি ৩৬ লক্ষ ৬৩ হাজার ৯২৩ টাকা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এই ঘটনা কি নেহাতই স্বাস্থ্য ভবনের কর্তাদের কর্তব্যে গাফিলতি, নাকি এর পিছনে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে পাইয়ে দেওয়ার চক্রান্ত? খতিয়ে দেখতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী।
২০২১-এর শেষে বিষয়টি নজরে পড়ে স্বাস্থ্য দফতরের। এবং তার পরেই সবক’টি মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি ও জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে পেমেন্ট বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।