রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের বর্তমান বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। দীর্ঘদিন কেটে গেলেও মেলেনি জামিন। এদিকে মন্ত্রিত্বের পাশাপশি তিনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও বরাবরই গুরুদায়িত্ব পালন করে এসেছেন। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত এই সৈনিক বাম আমলেও বিধায়ক থাকার পাশাপশি ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক। সেইসময় নির্মল ঘোষ ছিলেন দলের জেলা সভাপতি। পরবর্তীতে তৃণমূলে মুকুলায়নের যুগে দায়িত্ব বদল হয়। বিধায়ক নির্মল ঘোষ পর্যবেক্ষক ও জ্যোতিপ্রিয় অখণ্ড উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি হন। তবে সাংগঠনিক জেলা ভাগের পর তৃণমূলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতির দায়িত্ব পান বালু। যদিও গোটা জেলার সাংগঠনিক ক্ষেত্রেই তাঁর গুরুত্ব অপরিসীম। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থেকে ব্যারাকপুর, দলের যে কোনো কর্মসূচিতেই এতদিন অগ্রণী ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। ফলে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকায় লোকসভা ভোটের আগে দলীয় সংগঠন ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা ঘাসফুল শিবিরের। আর তাই এবার এই পরিস্থিতিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূলের সাংগঠনিক দায়িত্ব সমলাতে আট জনের বিশেষ কোর কমিটি গড়ে দিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, বিশেষ এই কোর কমিটিতে থাকছেন নারায়ণ গোস্বামী, তাপস রায়, হাজি নুরুল, রথীন ঘোষ, বিশ্বজিৎ দাস, বীনা মন্ডল, পার্থ ভৌমিক এবং সুজিত বসু। তবে মন্ত্রী-বিধায়করা কোর কমিটিতে জায়গা পেলেও কমিটিতে ঠাঁই মেলেনি দমদমের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়, কিংবা ব্যারাকপুরের ডাকাবুকো সাংসদ অর্জুন সিং সহ কোনো সাংসদেরই। এমনকী, একদা অখণ্ড উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব সামলানো বিধায়ক নির্মল ঘোষও ব্রাত্য থেকে গিয়েছেন এই বিশেষ কোর কমিটিতে। যা ঘিরে শাসক দলের জেলাস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যেই অসন্তোষ দানা বাঁধার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একদিকে বৈঠক করে তৃণমূল সুপ্রিমো যখন বৈঠকে দলের নেতাদের নিজেদের মধ্যে বিবাদ মেটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন, তখন এই ঘটনায় দলের জেলা নেতৃত্বে আড়াআড়ি ভাঙনের আশঙ্কা কানাঘুষোয় শোনা যাচ্ছে দলের অন্দরেই।
উল্লেখ্য, বুধবার দলীয় নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী। সেই বৈঠকেই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বালুর অবর্তমানে উত্তর ২৪ জেলার সাংগঠনিক দায়িত্ব সামলাতে কোর কমিটি গড়ে দেন। বৈঠকে নেত্রী বলেন, “নিজেদের মধ্যে বিবাদ মেটান।বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে সবাইকে।”