পুনের এমআইটি ওয়ার্ল্ড পিস ইউনিভার্সিটি আয়োজন করেছে দ্বাদশ ভারতী ছাত্র সংসদ শীর্ষক এক নকল সংসদের আয়োজন। প্রতি বছরের মতো এবছরও ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা এই নকল সংসদে গোটা দেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার পড়ুয়া যোগ দিয়েছেন। প্রতিদিন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেখানে বিতর্ক আয়োজন হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাও সেখানে যোগ দিচ্ছেন।
ভারতীয় ছাত্র সংসদের দ্বিতীয় দিনের আলোচ্য ছিল গণতন্ত্র বনাম রাজতন্ত্র। সেখানে বর্তমানের পরিবারতন্ত্রই যে বিগত দিনের রাজতন্ত্র তার উপর জোর দিয়েছেন বক্তারা। প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক তথা বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষ বিশেষ বক্তা হিসেবে ভাষণ দিতে গিয়ে পরিবার তন্ত্রকেই নিশানা করেন, “পরিবারতন্ত্র গণতন্ত্রের আঁচলে বাজে দাগ মাত্র। যত দ্রুত এই পরিবারবাদকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানো যাবে ততই মঙ্গল। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসও আজ অবলুপ্তির পথে কারণ একটি মাত্র পরিবার গোটো দলটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আঞ্চলিক ছোট রাজনৈতিক দল গুলিও এই পরিবার বাদ থেকে মুক্ত নয়। এটি গণতন্ত্রের অসুখ।”
ভারতীয় ছাত্র সংসদে ভাষণ দিতে গিয়ে বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা কলামিস্ট পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা আবার রাজতন্ত্রের সঙ্গে পুঁজিবাদের বর্তমান সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন। “পুঁজিপতিরা বিভিন্ন স্বার্থে সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের পুঁজির জোরে সরকার পালটে যাচ্ছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে যেভাবে সরকারের বদল হয়েছে তাতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পুঁজিপতিদের অশুভ আঁতাত ফের সামনে চলে এসেছে। আর এই নিয়ে আওয়াজ তুললে দেশদ্রোহী বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শুধু মাত্র একটি বাণিজ্যিক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বলায় আজ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আমার বিরুদ্ধে ছ’টি মানহানির মামলা চলছে,” তিনি বলেন।
এই বিষয় নিয়ে লোকসভার দুই প্রাক্তন অধ্যক্ষ শিবরাজ পাটিল ও মীরা কুমারও বিতর্কে অংশগ্রহন করেন। ছিলেন দিল্লির আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংও।
ভারতীয় ছাত্র সংসদের প্রতিষ্ঠাতা রাহুল ভি কারাড এই আয়োজন সম্পর্কে বলেন, “আগামী প্রজন্মকে শুধু দায়িত্ববান নাগরিক হলেই চলবে না তাদেরকে রাজনীতিতেও নেতৃত্ব দিতে হবে। আর এই ধরনের আলোচনা ও বিতর্ক থেকেই গণতন্ত্র মজবুত হবে বলে আমার বিশ্বাস। গণতন্ত্রের পবিত্র ভাবনা তাই আগামী প্রজন্মের মধ্যে জারিত করতে আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে এই ছাত্রদের সংসদ আয়োজন করে চলেছি।” উল্লেখ্য প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টিএন শেষন এই বিতর্কের সূচনা করেন।